কোটা আন্দোলন: কী বলছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা
২ জুলাই ২০১৮ ১৭:৩৮
।। মীর মেহেদী হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: অভিযোগ উঠেছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় চড়াও হচ্ছে ছাত্রলীগ এবং তাদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা সারাবাংলাকে বলছে, কোটা আন্দোলন মূলত শিবির-জামায়াত-বিএনপির একটি ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্র থামাতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থিতিশীল রাখতে যা যা করণীয় তার সবই করছে ছাত্রলীগ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক লুৎফর নাহার মিলা সারাবাংলাকে বলেন, “রোববার (১ জুলাই) সংবাদ সম্মেলন করতে না দেওয়া এবং হামলার প্রতিবাদে সোমবার (২ জুলাই) আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। আমরা শহীদ মিনারে আসতেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। মেয়েদেরও তারা লাথি-ঘুষি মেরেছে। একজন মেয়ের মাথাও ফেটে গেছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা সৈকত ওই মেয়েটিকে মেরেছে। তবে আহত শিক্ষার্থীর নাম জানা যায়নি।
ছাত্রলীগের মহসীন হলের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী বলেন, ‘আমাাদের কাছে তথ্য আছে, পতাকা মিছিলের নামে আন্দোলনকারীরা অরাজকতা সৃষ্টির চেষ্টা করবে। তাই নাশকতা ঠেকাতে তাদের ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হচ্ছে।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন বলেন, ‘মামুন, ফারুক, রাশেদ এটা তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষ। এটা তাদের নিজেদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে অভ্যন্তরীণ ঝামেলা। যারা বেহুদা ইস্যু নিয়ে নিজেদের বিরোধকে জাতীয় পর্যায়ের ইস্যুতে পরিণত করতে চায় তা প্রতিরোধের জন্য ছাত্রলীগ মাঠে আছে এবং থাকবে। সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রেও ছাত্রলীগ কাজ করছে।’
ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে সংগঠনটির ইমেজ নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে এসএম জাকির হোসাইন বলেন, ‘এই আন্দোলনে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ নিয়ে আমরা কথা বলছি। প্রধানমন্ত্রী সমাধান দিয়েছেন, মন্ত্রী পরিষদ সচিব একটি কমিটিও গঠন করেছে, তারপরও আন্দোলনের কারণ হচ্ছে, শান্ত পরিস্থিতিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায় একটি গোষ্ঠী। তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। এখানে ছাত্রলীগের ভূমিকা বা ইমেজ নিয়ে কোনো বিতর্ক হচ্ছে না।’
ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পী বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ যখন এর সংস্কার চায়, তখন বুঝে হোক না বুঝে হোক প্রধানমন্ত্রী কিন্তু তার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু তারপরও এটাকে একটি গোষ্ঠী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে নিচ্ছে। আর বেশিরভাগ ঘটনাগুলোর ভুল তথ্য দিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। যেমন, ছাত্রলীগ নেতা এশাকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়। তারপর থেকেই বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে, যে এটার উদ্দেশ্য কোটা সংস্কার বা বাতিল নয়- শিবির এবং ছাত্রদল যৌথভাবে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটা আন্দোলনকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। এমনকী বিভিন্ন জায়গায় তারা মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে।’
ছাত্রলীগ গণপিটুনি দিয়ে একাধিক শিক্ষার্থীকে পুলিশের কাছে নিয়ে গেছে এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ব্যাপার না। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেওয়ার পর সাধারণ শিক্ষার্থী আন্দোলন স্থগিত করে দিয়েছে। কেবল একটি পক্ষ বিরোধিতা করছে। এই বিষয় নিয়ে যখন ছাত্রলীগ ভূমিকা পালন করছে তখন কেন ইমেজ নষ্ট হবে?’
ছাত্রলীগের আরেক সহ-সভাপতি মেহেদী হাসান রনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রথম দিকে এতটা বিতর্ক ছিল না, কিন্তু প্রথম থেকেই বিতর্ক হওয়া উচিত ছিল। এখন ক্যাম্পাসের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার জন্য ছাত্রলীগ শুধু নয়, সাধারণ ছাত্ররাও এর প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু ধর্মঘট বা অবরোধের ডাক দিচ্ছে কোঠার পক্ষের কর্মীরা। তবে বাস্তবে কিছুই হচ্ছে না, এই আন্দোলনে কোনো কাজ হবে না। ছাত্রলীগ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে সুষ্ঠু পরিবেশ ধরে রাখার জন্য যা যা করণীয় তাই করা হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এমএমএইচ/জেআইএল/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook