চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে নিজ বাসায় ছুরিকাঘাতে এক নারীকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক ঝগড়ার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই নারীর স্বামীকে থানায় নিয়েছে। ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়া ওই পরিবারের আরও ৫ সদস্যকে গ্রেফতার অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার (১৩ জুলাই) রাতে নগরীর পতেঙ্গা থানার কাটগড় এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। নিহত ফেরদৌস আক্তার (২৭) কাটগড় এলাকার বাসিন্দা পেশায় নির্মাণ শ্রমিক লোকমান হোসেনের স্ত্রী।
নিহতের বড় ভাই মামুন খান সারাবাংলাকে জানান, বোনের শ্বশুরবাড়ি আর তাদের বাসা পাশাপাশি। গত (রোববার) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তাদের বাসা থেকে ঝগড়া ও কান্নাকাটির শব্দ শোনা যায়।
কিছুক্ষণ পর ফেরদৌসের কান্নার শব্দ পেয়ে মামুন তার স্ত্রীকে ওই বাসায় পাঠান। এরপর মামুনও ওই বাসায় যান।
‘আমরা ওই বাসায় গিয়ে দেখি, আমার বোন উঠানের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় কাতরাচ্ছে। তার স্বামী লোকমানকে আমরা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। আমি ও লোকমান মিলে ফোরদৌসকে গাড়িতে তুলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক(এসআই) নুরুল আলম আশেক সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাত ১২টার পর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার তাকে (ফেরদৌস) তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
মামুন খান জানান, রাতে হাসপাতাল থেকে লোকমানকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। তবে তার মা ও দুই ভাই, ভাবি এবং ভাতিজা পালিয়ে গেছে।
হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে আমার বোনকে তার স্বামী, শ্বাশুড়ি, পরিবারের লোকেরা নির্যাতন করে আসছিল। কয়েকবার সে আমাদের বাসায় চলে আসে। আমি আবার তাকে নিয়ে গিয়ে মীমাংসা করেছি।’
‘গত রাতে ঝগড়ার মধ্যে আমার বোনকে ছুরি মেরে খুন করা হয়েছে। ছুরির চারটা আঘাত দেখেছি। একটা আঘাত একেবারে বুকের কলিজা বরাবার করেছে। ঘাড়ে, পেটে, পিঠেও ছুরিকাঘাত করেছে।’
মামুন জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজে লোকমানের বড় ভাই সোলেমান এবং ছোট ভাই রনি- দুজনের হাতে দুটি ছোরা দেখা গেছে। এছাড়া তার স্বামীর আচরণও তাদের কাছে রহস্যজনক মনে হচ্ছে।
নিহত ফেরদৌসের স্বামী এবং পলাতক পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করবেন বলে তিনি জানান।
পতেঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফরিদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি, পারিবারিক বিষয়ে ঝগড়ার মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে। দেবর ছুরিকাঘাত করেছে বলে শুনেছি। ভিকটিমের হাজবেন্ড আমাদের হেফাজতে আছে। দেবরসহ পরিবারের আরও পাঁচ সদস্য আছে, তারা পালিয়ে গেছে। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।’