নোয়াখালী: নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকায় ৭ জুলাই থেকেই চলছে টানা বৃষ্টিপাত। রোববার (১৩ জুলাই) দিনভর থেমে থেমে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও সেটি রাতে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতে রূপ নেয়। ফলে গত কয়েকদিন জলাবদ্ধ এলাকাগুলো থেকে কিছুটা পানি নামলেও সেগুলোতে আবারও বেড়েছে পানি। দীর্ঘদিনের স্থায়ী জলাবদ্ধতা জনদুর্ভোগে রূপান্তরিত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যা আতঙ্কে লোকজন।
সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে মাইজদী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মাইজদী কোর্ট অফিসে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। লঘুচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
জানা গেছে, গত তিনদিনে পৌর এলাকায়’সহ বিভিন্ন উঁচু এলাকায়গুলো থেকে পানি কিছুটা নেমে গেলেও বৃষ্টিতে ফের ওই এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। আর গ্রামাঞ্চলের জলাবদ্ধ এলাকা গুলোতে বাড়ছে পানি। জেলায় এখনও পানিবন্দী প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
জেলার সদর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ ও বেগমগঞ্জ উপজেলার গ্রামীণ বেশিরভাগ সড়ক এখনও কয়েক ফুট পানিতে নিমজ্জিত। অধিকাংশ বাড়ির আঙ্গিনায় হাঁটু পরিমাণ বা কোথাও তারও বেশি পানি রয়েছে। গত সোমবার থেকে পানি বন্দি এসব এলাকার মানুষ। খাল ও ড্রেনগুলো দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না নামায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘ হওয়ার শঙ্কায় এলাকাবাসী।
এদিকে রোববার (১৩ জুলাই) দিনব্যাপী জলাবদ্ধতা নিরসনে ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা দ্রুত করতে সদর উপজেলার কালাদরাপ ইউনিয়নের মুন্সীতালুক থেকে চর মটুয়া ইউনিয়নের উদয় সাধুর হাট পর্যন্ত খালের উপর অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহনেওয়াজ তানভীর। এ কার্যক্রমে খালের বাকি অংশে উচ্ছেদ সোমবার সকাল থেকে আবারও শুরু হয়েছে বলে জানান সহকারী কমিশনার।
চলমান দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে জামায়াতে ইসলামী জেলা শাখা। এ বিষয়ে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আন্দোলনকারীরা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা। কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী জেলা জামায়াতের আমির ইসহাক খন্দকার।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ জানান, অতিবৃষ্টি ও চলমান জলাবদ্ধতায় জেলার ৫৭টি ইউনিয়নের প্রায় ৯০ হাজারের বেশি লোকজন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনও বিভিন্ন এলাকার ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে শতাধিক গৃহপালিত পশুসহ আশ্রিত আছে ১ হাজারের বেশি মানুষ। জলাবদ্ধতায় অর্ধশতাধিক বাড়ি ঘর, সাড়ে ৭ হাজার একর ফসলি জমি, প্রায় ৯ হাজার গবাদি পশু ও ৪০ হাজার মাছের খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে।