চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় এক ফল বিক্রেতাকে গলা কেটে খুনের মামলায় তার স্ত্রীসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রামের অষ্টম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এইচ এম শফিকুল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
খুনের শিকার জয়নাল আবেদীন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের তেলিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি নগরীর হালিশহরে ফল বিক্রি করতেন।
মামলার রায়ে দণ্ডিত তিনজন হলেন- জয়নালের স্ত্রী রিমা আক্তার এবং তার দুই সহযোগী শাহাদাত হোসেন কাইয়ুম ও শাহাদাত হোসেন। রায় ঘোষণার পর আদালত তাদের সাজামূলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম জেলা আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট আবছার উদ্দিন হেলাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘জয়নাল আবেদীন নামে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে নৃশংসভাবে খুনের মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আদালত সাক্ষ্য ও নথিপত্র পর্যালোচনা করে তাদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে আমি এ রায়ে সন্তুষ্ট।’
মামলার নথি পর্যালোচনায় জানা গেছে, ২০২১ সালের ১০ এপ্রিল রাতে নিজ ঘরে জয়নাল আবেদীনকে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এরপর তার নাড়িভুঁড়িসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঘরের পাশে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন খবর পেয়ে পুলিশ জয়নালের মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই মো. মহিউদ্দিন সীতাকুণ্ড থানায় মামলা করেন। পুলিশ ১২ এপ্রিল রীমা আক্তার ও শাহাদাত হোসেনকে গ্রেফতার করে। তারা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর আদালতে তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন সীতাকুণ্ড থানার তৎকারীন এসআই সাজিব হোসেন। ২০২৩ সালের ১১ মে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রফিকুল ইসলামের আদালতে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং বাদী ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সোমবার রায় দিয়েছেন আদালত।
অতিরিক্ত পিপি আবছার উদ্দিন বলেন, ‘অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, জয়নালের স্ত্রী রীমা আক্তারের সঙ্গে কাইয়ূমের পরকীয়া ছিল। এর জেরে তিনজন মিলে জয়নালকে খুন করেন। এ অভিযোগ আমরা সাক্ষীদের মাধ্যমে প্রমাণে সক্ষম হয়েছি।’