Monday 14 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গান-কবিতা-আড্ডায় আরসিবিডিএএ’র পুনর্মিলনী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুলাই ২০২৫ ১৮:৩৮ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ১৯:৩৪

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (আরসিবিডিএ) আয়োজিত পুনর্মিলনী। ছবি: সংগৃহীত

দিনের শুরুতে ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, দুপুরে চকচকে রোদ, পড়ন্ত বিকেলে ঈষৎ কালো মেঘ, দিন শেষে নির্মল আকাশ- আষাঢ়ের ২৭তম দিনে রোদ-বৃষ্টি-মেঘ গায়ে মেখে দারুণ সময় কাটিয়ে গেলেন দক্ষিণ বঙ্গের প্রাচীন বিদ্যাপিঠ রাজেন্দ্র কলেজের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থারীরা। আর তাদের একত্রিত করেছিল রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (আরসিবিডিএ)।

দেশের নানা প্রান্ত তো বটেই, দেশের বাইরে থেকেও এসেছিলেন বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা! গান, কবিতা, আড্ডায় চমৎকার সময় কাটিয়ে ফিরে গেছেন যার যার ঠিকানায়। সঙ্গে নিয়ে গেছেন মনে রাখার মতো একটি দিনের স্মৃতি।

বিজ্ঞাপন

দিনব্যাপী আয়োজনের শুরুটা হয়েছিল জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে। আরসিবিডিএএ’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর আব্দুল মোতালেব শেখের স্বাগত বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় বক্তৃতা পর্ব। ফাঁকে ফাঁকে চলে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনুভূতি প্রকাশ, গান, কবিতা, গল্প এবং আড্ডা।

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরসিবিডিএ) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আগত প্রাক্তনীদের বরণ করে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরসিবিডিএ) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আগত প্রাক্তনীদের বরণ করে নেওয়া হচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আরসিবিডিএএ’র সভাপতি সঙ্গীতশিল্পী শিল্পী আক্তার শোনান একাধিক গান, সোনিয়া আক্তারের কণ্ঠে দু’টি চমৎকার রবীন্দ্র সঙ্গীত অনুষ্ঠানে যোগ করে নতুন মাত্রা। আর জাকিয়া সুলতানার খালি গলায় ‘‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি/ শুষ্ক হৃদয় লয়ে আছে দাঁড়াইয়ে/ ঊর্ধ্বমুখে নরনারী/বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’’ গানটি সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়।

রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এস. এম আবদুল হালিম, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওবায়দুর রহমান, সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর তালুকদার আনিসুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহম্মদ শহিদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক চৈতন্যচন্দ্র দাস, রাজেন্দ্র কলেজের শিক্ষক সমতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফজলুল করীম, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইউনূস আলী, প্রভাষক হাফিজুর রহমানের বক্তব্যের কোনো কোনো অংশ ছিল গান-কবিতার মতোই উপভোগ্য। এক মুহূর্তের জন্যও ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি কারও।

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরসিবিডিএ) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আগত প্রাক্তনীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরসিবিডিএ) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আগত প্রাক্তনীরা। ছবি: সংগৃহীত

প্রফেসর তালুকদার আনিসুল ইসলামের, ‘‘আমাকে ছাড়া আরসিবিডিএএ’র পুনর্মিলনী সম্ভব-ই না’’, ‘‘প্রফেসর মো. ওবায়দুর রহমামের, ‘‘যে কাজটা অনেকেই পারে না, সে কাজটা বাংলা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষার্থরীরা খুব সার্থকতার সঙ্গে করে দেখাচ্ছে বারবার’’, ‘‘প্রফেসর এস এম আব্দুল হালিমের ‘‘বাংলা বিভাগ আমার ভালো লাগার একটা জায়গা। আজকের এই আয়োজনটা সেই ভালোলাগা আরও বাড়িয়ে দিল’’, ইউনুস আলীর ‘‘আমি কেন যে এসব প্রাক্তনদের সরাসরি শিক্ষক হলাম না’’- এসব বক্তৃতা অংশ প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের হৃদয়ের গহিন তলে যে প্রবেশ করেছে, সেটা হলফ করেই বলা যায়।

শুধু কি তাই, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান শহিদুল ইসলাম বাবুর কণ্ঠে প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘‘হাওয়া বয় শনশন তারারা কাঁপে/হৃদয়ে কি জং ধরে/পুরনো খাপে ! কার চুল এলোমেলো/ কিবা তাতে আসে গেল! কার চোখে কত জল/কেবা তা মাপে? সহযোগী অধ্যাপক চৈতন্যচন্দ্র দাসের কণ্ঠে লালনগীতি, সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর তালুকদার আনিসুল ইসলামের কণ্ঠে কাজী নজরুল ইসলাম বিদ্রোহী কবিতার আবৃত্তি অনুষ্ঠানে নতুন মাত্রা যোগ করে। আর প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিজয় ও সবিতা বৈরাগীর স্বরচিত কবিতা তো ছিলই।

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরসিবিডিএ) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আগত প্রাক্তনীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (আরসিবিডিএ) পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আগত প্রাক্তনীরা। ছবি: সংগৃহীত

আয়োজনকে নান্দনিক করতে চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখেননি আরসিবিডিএএ’র কোষাধ্যক্ষ রওশনারা ইসলাম রুমা (রুমা ঠাকুর)। হাত খুলে অর্থ ব্যয়ের পাশাপাশি ইউনিক সব আইডিয়া যোগ করে অনুষ্ঠানকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন তিনি। এই যেমন ধরুন- ফুলের ডালায় কফি পরিবেশন, বিশাল আকৃতির কেক টুকরো টুকরো করে কেটে ছোট ছোট প্লেটে চামচসহ সাজিয়ে সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া, বাচ্চাদের জন্য জুস! আবার যাদের এসবে আপত্তি, তাদের জন্য বাদাম-খেজুর-আখরোট আনতেও ভুল করেননি তিনি।

আর হ্যাঁ, আয়োজনকে সাফল্যমণ্ডিত করতে আরসিবিডিএএ’র সহ-সভাপতি চামেলী বসু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমজাদ হোসেন পলাশ, যুগ্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মারুফ হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক শুকলা দাস, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক সামিনা জেসমিন সিম্মির ছিল নানামুখী ভূমিকা।

অসুস্থ শরীর নিয়েও অনুষ্ঠান সঞ্চালনার ভূমিকা পালন করেন আরসিবিডিএএ’র যুগ্ম সম্পাদক কাজী কাওছার সুইট। তার সঙ্গে ছিলেন আরসিবিডিএএ’র আন্তর্জাতিক সম্পাদক আয়ারল্যান্ড প্রবাসী সামিনা জেসমিন সিম্মি। সারাদিনের কর্মযজ্ঞে বাংলা বিভাগের একঝাঁক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন কর্মতৎপর। তাদের মধ্যে মোল্লা আবির ও মো. হেলাল খন্দকার অন্যতম।

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (আরসিবিডিএ) আয়োজিক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

রাজেন্দ্র কলেজ বাংলা বিভাগ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (আরসিবিডিএ) আয়োজিক পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান। ছবি: সংগৃহীত

আরসিবিডিএএ’র সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর আব্দুল মোতালেব শেখের সমাপণী বক্তব্যের আগে অনুষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের হিসাব তুলে ধরেন কোষাধ্যক্ষ রওশনারা ইসলাম রুমা (রুমা ঠাকুর)। তার আগে সংগঠনের কর্মকাণ্ড, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরেন আরসিবিডিএএ’র সাধারণ সম্পাদক আসাদ জামান।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

অ্যালামনাই আরসিবিডিএএ গান-কবিতা-আড্ডা পুনর্মিলনী বাংলা বিভাগ রাজেন্দ্র কলেজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর