Monday 14 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ঢাকায় জাতিসংঘের অফিস দীর্ঘমেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ জুলাই ২০২৫ ১৯:২০

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

ঢাকা: ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ শঙ্কার কথা জানান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস খোলার উদ্দেশ্য, কর্মপরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে সহায়ক উপাদান সম্পর্কে দেশবাসীকে বিস্তারিত অবহিত না করে উপদেষ্টা পরিষদের এই বিষয়ে সম্মতি দেওয়া আমাদেরকে বিস্মিত করেছে। বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় মানবাধিকার পশ্চিমাদের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের মতো একটা প্রতিষ্ঠান, যাদের একচোখা নীতি বিশ্বব্যাপী নিন্দনীয়, যাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকারকে ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের দৃষ্টান্ত রয়েছে, তাদের কার্যালয় খোলার অনুমতি দেওয়া দেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদে বিপদ ডেকে আনবে বলে আমরা মনে করি।’

বিজ্ঞাপন

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘জাতীসংঘের মানবাধিকারের সংজ্ঞা সর্বজনবিদিত না বরং পশ্চিমা দর্শন প্রভাবিত; যা অনেক মাত্রাতেই বাংলাদেশসহ প্রাচ্যের সমাজ-দর্শন ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জাতিসংঘের মানবাধিকারের সংজ্ঞার মধ্যে সমকামিতার বৈধতা দেওয়া, ট্রান্সজেন্ডারকে স্বীকৃতি দেওয়া, গর্ভপাতের অধিকার দেওয়া, উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষকে একই বর্গে অন্তুর্ভুক্ত করা, যৌন শিক্ষাকে উন্মুক্ত করা এবং মৃত্যদণ্ডকে রহিত করার মতো বিষয় অন্তুর্ভুক্ত। উপর্যুক্ত প্রত্যেকটা বিষয় আমাদের হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এখন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয় এই বিষয়গুলোকে ভিত্তি করে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অতি খারাপ বলে প্রতিবেদন করবে, যা বিশ্বে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের নাগরিকদের কর্মসংস্থান, ভ্রমণকে বাঁধাগ্রস্থ করবে এবং বাংলাদেশে বৈদেশিক পর্যাটনকে নিরুৎসাহিত করবে।’

তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক এই কার্যালয় প্রাথমিকভাবে এখন সমকামিতাসহ উপর্যুক্ত বিষয়ে মানুষের মনোভাব তাদের অনুকূল করার জন্য নানা প্রচারণা চালাবে, ফন্দি-ফিকির করবে। প্রথম কথা হলো, যা আমাদের সমাজের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না, যাতে আমাদের কোনো কল্যাণ নাই এমন বিষয়ে মানুষকে প্রভাবিত করার সুযোগ আমরা কেন দেব? দ্বিতীয়ত প্রত্যেকটা বিষয় যেহেতু মানুষের হাজার বছরের বোধ-বিশ্বাসের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাই সমাজের ভেতর থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আসবে এবং প্রতিরোধ হবে। তখন মানুষের সহজাত প্রতিরোধকে নেতিবাচকভাবে সারা বিশ্বে উপস্থাপন করা হবে। সামগ্রিকভাবে এই কার্যালয় স্থাপনের কোনো ইতিবাচক দিক নাই। বরং এর সকল মাত্রাতে দেশের ক্ষতি ও বিপদের সম্ভাবনা পরতে পরতে বিরাজমান। তাই কার্যালয় স্থাপনের এই সিদ্ধান্ত থেকে অবশ্যই সরে আসতে হবে।’

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘ফিলিস্তিনে হাজার হাজার শিশু, নারী ও নিরীহ মানুষ হত্যা বন্ধে জাতিসংঘকে বেশি মনোযোগী হওয়া উচিৎ। ফিলিস্তিনিদের হত্যার প্রতিবাদে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। রোহিঙ্গাদের জন্য বেশি উৎসাহী হওয়া উচিত।’

সারাবাংলা/এজেড/এইচআই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ গাজী আতাউর রহমান জাতিসংঘ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর