ঢাকা: তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু- এমনটিই মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েরর সামনে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে লালচাঁদ সোহাগকে হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এই বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যারা আজ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু, যারা দেশের বিরুদ্ধে বলে তারা গণতন্ত্রের শত্রু, তারা এই দেশের মানুষের বিরুদ্ধে কথা বলে। আসুন, আজকে এই শান্তিপূর্ণ র্যালির মধ্য দিয়ে আমরা সবাইকে জানিয়ে দিই, গণতন্ত্রের প্রশ্নে আমাদের কোনো আপস নাই। আমি ধিক্কার জানাচ্ছি ওই সমস্ত তথাকথিত রাজনৈতিক নেতাদেরকে, যারা তারেক রহমান সম্পর্কে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বলেছেন।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তাই বলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বলব না। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমাদের নেতাকে অশ্লীল-অশ্রাব্য কথা বললে মান ছোট হয় না, ছোট হয় তারা যারা এসব অশ্লীল কথা বলে। ইস্পাত কঠিন দৃঢ় ঐক্য নিয়ে ১৫ বছর আমরা যে লাঞ্ছিত হয়েছি, নির্যাতিত হয়েছি, নিপীড়িত হয়েছি- সেই ঐক্য নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। আমি সকল দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাব, আসুন গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একযোগে সামনে দিকে এগিয়ে যাই।’

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশ। ছবি: সারাবাংলা
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, এই খুনের ঘটনার পুঙ্খানুপঙ্খু রূপে তার তদন্ত হতে হবে, যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।এটা (নির্মম হত্যাকাণ্ড) যারা করছে তারা বাংলাদেশকে ধবংস করার জন্য করছে। আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে র্যালিতে অংশ নিয়ে সবাইকে জানিয়ে দিই, দেশবাসীকে জানিয়ে দিই এবং একইসঙ্গে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদেরও জানিয়ে দিই বিএনপি একমাত্র দল, যে দল জনগণকে তার লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আমার একটা অনুরোধ থাকবে, আমরা যেন কারও পাতানো ফাঁদে পা না দিই। তারা চেষ্টা করছে আমাদেরকে উত্তেজিত করে তাদের পাতা ফাঁদে পা দেওয়ার জন্য, যাতে আমরা উত্তেজিত হয়ে যাই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র চাই। আমাদের লক্ষ্য এখন একটাই যে, বাংলাদেশে সেই ২৬ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হতে সেটা আমাদের তারেক রহমান সাহেব প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে লন্ডনে আলাপ করে ঠিক করেছেন। এর কোনো ব্যতিক্রম হবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন ঠিক হওয়ার পরের থেকে ওদের মাথা বিগড়ে গেছে। যখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমান সাহেব নিশ্চিত করে ফেলেছেন যে, এবার নির্বাচন হবে তখন থেকেই তাদের মাথা বিগড়ে গেছে। আমরা নির্বাচন চাই, যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেই সময়টাতে আমরা নির্বাচন চাই। আমরা ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই, আমরা জনগণের খাওয়া-পরার ব্যবস্থা করতে চাই, চাকুরি সংস্থান করতে চাই, নতুন এক বাংলাদেশ আমরা নির্মাণ করতে চাই আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে।’
তিনি বলেন, ‘ওদের পরিকল্পনাটা অত্যন্ত ভয়াবহ যে, বাংলাদেশে আবার একটা অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা, অস্থিরতা সৃষ্টি করা, বিভাজনের সৃষ্টি করা, বাংলাদেশকে আবার একটা জায়গায় নিয়ে আসা যেখানে গণতন্ত্র আবার তিরোহিত হবে। সেজন্য আমাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বড় দল হিসেবে, গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আর কোনোদিন যেন ফ্যাসিজম এদেশে চালু হতে না পারে তার ব্যবস্থা করা। আপনাদের কাছে একটা অনুরোধ রাখব যে, ধৈর্য্য ধরে সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।’