ঢাকা: স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’র কর্ণধার খায়রুল বাশার। এমনকি, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শত শত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্রটি।
ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে সোমবার (১৪ জুলাই) জানিয়েছেন সংস্থাটির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসিম উদ্দিন খান।
তিনি বলেন, “খায়রুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে তার স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্র গড়ে তোলেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়। ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ’- এই আশ্বাসের আড়ালে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শত শত শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্রটি।”
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘চটকদার বিজ্ঞাপন, ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া প্রতিনিধিত্বের নাম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরাসরি অফিসে এবং বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে টাকা আদায় করেন তারা। তদন্তে দেখা যায়, প্রতারিত অনেক শিক্ষার্থীর নামে কোনো আবেদনই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে করা হয়নি, আবার অনেকেই বিদেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়ে পড়েছেন বিপদের মধ্যে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। ভুক্তভোগীদের অনেকেই এনআই অ্যাক্টসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা গ্রাহকদের কাছ থেকে আদায়কৃত অর্থ নিজেদের নামে ও অন্যদের নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে উত্তোলন করে তা দিয়ে স্থাবর সম্পদ ক্রয়, ব্যবসা পরিচালনা এবং অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন।’
জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সিআইডি অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং অর্থ আত্মসাতের অপরাধগুলো অনুসন্ধানপূর্বক প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)-এর ৪(২)/৪(৪) ধারায় গুলশান থানায় মামলা করে। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’
এদিন, দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে মানি লন্ডারিং মামলায় প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’র কর্ণধার খায়রুল বাশার বাহারকে গ্রেফতার করে সিআইডি।