Tuesday 15 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনৈতিক পদক্ষেপের প্রশংসা বিশ্ব ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুলাই ২০২৫ ১২:৫৩

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

ঢাকা: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে অর্থনৈতিক সংস্কার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির প্রশংসা করেছেন বিশ্বব্যাংকের নবনিযুক্ত দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জোহানেস জুট।

সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন জুট।

এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটান বিষয়ক নতুন বিভাগীয় পরিচালক জ্যাঁ পেসমে।

জোহানেস জুট স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমি বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের কান্ট্রি ডিরেক্টর ছিলাম।’

বিজ্ঞাপন

অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘আপনি এবং আপনার দুর্দান্ত দল একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে দারুণ কাজ করছেন। আমরা আপনাদের পাশে আছি এবং বাংলাদেশিদের আকাঙ্ক্ষায় আমাদেরও অংশগ্রহণ রয়েছে।’

গত বছরের জুলাই বিদ্রোহে নিহত শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি ছিল আমাদের সবার জন্য এক আবেগঘন মুহূর্ত।’

অধ্যাপক ইউনূস তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখন মনে হয়েছিল যেন একটি ভূমিকম্পের পরে এলাকায় এসেছি। আমাদের কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। কিন্তু আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের সমর্থন আমাদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত জুলাইয়ে আমাদের তরুণরা যেটি করেছে, তা ইতিহাস হয়ে থাকবে। বিশেষ করে তরুণী ও নারীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য। আজ আমরা ‘জুলাই উইমেন্স ডে’ পালন করছি। তাদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।’

বাংলাদেশকে কেবল একটি ভূখণ্ড হিসেবে না দেখে বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে দেখার আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হলে গোটা দক্ষিণ এশিয়া উপকৃত হবে। আমাদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পরিবহন খাত আরও উন্নত করতে হবে। আমাদের সমুদ্র রয়েছে—এটি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’

তিনি বলেন, ‘অনেক দেশের জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। আমরা তাদের বলেছি—তাদের কারখানাগুলো বাংলাদেশে আনুন। আমরা শিল্প স্থাপনে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা দেব, যাতে বাংলাদেশ উৎপাদন হাবে পরিণত হতে পারে।’

নারীর ক্ষমতায়নে অধ্যাপক ইউনূসের ভূমিকার প্রশংসা করে জাট বলেন, ‘আমরা আপনাদের পাশে আছি। মেয়েদের জন্য দেওয়া শিক্ষা ভাতা কর্মসূচি একসময় বিশ্বব্যাংকই শুরু করেছিল, যেটি এখন অনেক দেশ অনুসরণ করছে। আমরা বাংলাদেশের তরুণদের জন্য সুযোগ সৃষ্টিতে সহযোগিতা করব।’

তিনি জানান, গত অর্থবছরে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশে ৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে এবং আগামী তিন বছরেও একই ধরনের সহায়তা অব্যাহত থাকবে।

এ সময় প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) নিয়ে অগ্রগতি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, নতুন পরিচালনার মাধ্যমে এনসিটিতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়েছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এটিকে আরও কার্যকর করে তোলা। পাশাপাশি ২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে নেট বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এর পেছনে কোম্পানিগুলোর অভ্যন্তরীণ ঋণ ও শক্তিশালী ইক্যুইটি বিনিয়োগ বড় ভূমিকা রেখেছে।

সারাবাংলা/জিএস/ইআ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর