চট্টগ্রাম ব্যুরো: আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন চট্টগ্রাম নগরীতে এক মাদরাসা ছাত্রকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেফতার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন মাহমুদ এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, নগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় ফজলে করিমকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য পুলিশের আবেদন শুনানির পর মঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে ফজলে করিমকে সশরীরে আদালতে না এনে কারাগারে থেকে ভার্চুয়ালি শুনানিতে হাজির করা হয়।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ১১ মাস পর গত ১ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর খলিফাপট্টি এলাকার বাসিন্দা মো. সুরুজ মিয়া কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। এতে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও তার ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরীসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, তার ছেলে নিজাম উদ্দিন (২১) নগরীর বাকলিয়ার শান্তিনগর এলাকায় একটি মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট দুপুরে নগরীর লালদিঘীর পাড়ে ছাত্র-জনতার সমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিল নিজাম। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ভারতে পালানোর পথে ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তের আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এরপর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।
ফজলে করিমের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলা, হত্যা, হত্যার চেষ্টা, দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তঃত ১২টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলায় তাকে কয়েকবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ।