ঢাকা: জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বিলুপ্তির জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। তারা বলেছে, এই সুপারিশ শুধু সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী নয়, বরং নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১, জাতিসংঘের সিডও সনদ ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যায় মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
তারা বলেন, ‘এই সুপারিশ নারী আন্দোলনের পাঁচ দশকের অর্জনের প্রতি অবজ্ঞাসূচক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নারীর ক্ষমতায়নের রূপরেখার পরিপন্থী।’
তারা দাবি করেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন বাড়ানোর পক্ষে মত দিলেও, কমিশনের পক্ষ থেকে একতরফাভাবে আসন বিলুপ্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও অসামঞ্জস্যপূর্ণ।’
মহিলা পরিষদ অভিযোগ করেছে, জাতীয় সংসদে এখনো অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীর যথাযথ প্রতিনিধিত্ব নেই। কারণ হিসেবে তারা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নারীদের নেতৃত্বে আনতে কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি এবং নির্বাচনে মনোনয়নে নারীদের উপেক্ষার কথা উল্লেখ করে। এ সময় তারা ৬ দফা দাবি করে।
দাবিগুলো হচ্ছে- জাতীয় সংসদের সাধারণ আসনে নারী-পুরুষ উভয়ের নির্বাচন নিশ্চিত করা; সংরক্ষিত নারী আসন বজায় রাখা; সংরক্ষিত নারী আসনের সংখ্যা কমপক্ষে এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করা; মনোনয়ন প্রথা বাতিল করা; সরাসরি জনগণের ভোটে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচন; এই ব্যবস্থাটি প্রাথমিকভাবে ২-৩ টার্মের জন্য কার্যকর রাখা।
বিবৃতিতে মহিলা পরিষদ সকল রাজনৈতিক দল এবং বিশেষ করে নারী রাজনৈতিক কর্মীদের এই ইস্যুতে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। তারা মনে করে, নারীর প্রকৃত রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের পথে এই ধরনের সুপারিশ একপ্রকার পশ্চাৎপদ মানসিকতার প্রতিফলন এবং নারীবিরোধী শক্তিকে উৎসাহিত করবে।