Wednesday 16 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাইকে ঘোষণা দিয়ে গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা, শুরুতেই পুলিশ ছিল নীরব দর্শক!

গোবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট
১৬ জুলাই ২০২৫ ২১:৪০ | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫ ০০:০৭

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশস্থলে হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে

গোপালগঞ্জ: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশস্থলে হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুর পৌনে দুইটার দিকে শহরের পৌর পার্কে আওয়ামী লীগের ৩০০-৪০০ লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এই হামলা চালায়। এ সময় মঞ্চের আশপাশে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের সেখান থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে দেখা যায়। তারা সেখান থেকে দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। একই সময়ে মঞ্চে ও মঞ্চের সামনে থাকা এনসিপির নেতা-কর্মীরাও দৌড়ে সরে যান।

হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় এনসিপির নেতা-কর্মীরা এক হয়ে পুলিশসহ ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে হামলাকারীদের ওপর অ্যাকশান না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এনসিপির স্থানীয় নেতারা।

বিজ্ঞাপন

এরপর দুপুর ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এরপর সাড়ে ৩টা পর্যন্ত তারা বক্তব্য দেন।

সভা শেষে এনসিপি নেতারা গাড়িতে উঠে সমাবেশস্থল ত্যাগ করার সময় গাড়িবহরে ফের হামলা হয়। গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়, গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাসদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। হামলাকারীরা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি লক্ষ্য করেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

বিকেল ৪টার দিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময় আশপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এনসিপি নেতাদের ওপর হামলার আহ্বান জানায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ কর্মীরা। একাত্তর টিভি, স্টার নিউজ ও মাল্টিমিডিয়ার সাংবাদিকদের বহনকারী গাড়িতে হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভি, ডিবিসি নিউজ ও কালের কণ্ঠের স্থানীয় সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেল ৫টার পরে গোপালগঞ্জ ছেড়ে বের হয়ে যান এনসিপি নেতারা। প্রশাসনের কড়া পাহাড়ায় তাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর নিয়ে গোপালগঞ্জ ছাড়েন। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, তাসনীম জারাসহ শীর্ষ নেতারা রয়েছেন।

এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার উলপুর-দুর্গাপুর সড়কের খাটিয়াগড় চরপাড়ায় পুলিশের গাড়িতে হামলা ও আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। খবর পেয়ে ওই এলাকা পরিদর্শনে যান সদর উপজেলার ইউএনও এম রাকিবুল হাসান। সেখান থেকে ফেরার পথে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার কংশুরে ইউএনওর গাড়িতে হামলা করা হয়। এ ঘটনায় তার গাড়ির চালক আহত হন।

উল্লেখ্য, ১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করছে দলটি। মঙ্গলবার দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এই কর্মসূচিকে ‘১৬ জুলাই: মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/এইচআই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর