ঢাকা: ‘গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলাকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার নীল নকশা’ হিসেবে দেখছে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ মতামত দেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বিষয়গুলো তুলে ধরেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিবৃতিতে বলা হয়, ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির সভায় ফ্যাসিষ্ট আওয়ামী লীগের দূর্বৃত্ত ও সমর্থকদের হামলায় চারজন নিহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে। সভা মনে করে পতিত ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সমর্থকেরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার জন্য ফ্যাসিষ্টবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির সমাবেশে আক্রমণের ঘটনা ঘটায়।
ফলশ্রুতিতে সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারি করতে হয়। যা এই মূহুর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবার নীল নকশা বলে মনে করা হয়। সভা এই প্রসঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে। সভা আশা করে রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সর্তকতার সঙ্গে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে, অন্যথায় গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে— বলা হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে জানানো হয়- জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সালাহ উদ্দিন আহম্মেদ সভাকে বিস্তারিত অবহিত করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় আগামী কাল ১৭ জুলাই রাত ৮টায় এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে লক্ষ করে যে গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিঘ্নিত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করবার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। মবোক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধ মূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলি অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টাবৃন্দ গণমাধ্যমে শুধুই কথাই বলছেন কিন্তু কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছেন।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, সম্প্রতি সংঘটিত মিডফোর্ডের নৃশংস হত্যাকান্ডে বিএনপিকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম, বিএনপি চেয়ারপার্সন, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের তরুণ জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত যে সকল অশ্লীল বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে।
তারেক রহমানের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ,অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।