Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুর্যোগ প্রতিরোধে দেশীয় পদ্ধতি গ্রহণের আহ্ববান বাপা ও বেন’র


২ জুলাই ২০১৮ ২১:৩৪

।। মাকসুদা আজীজ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর ।।

ঢাকা: বন্যা, জলবদ্ধতা ও ভূমিধসের মতো দুর্যোগ মোকাবিলায় বিদেশি ঋণ দাতা সংস্থা ও বিদেশি পরামর্শকের ভূমিকার অবসান ঘটিয়ে দেশীয় ও স্থানীয় পদ্ধতি গ্রহণের আহ্ববান জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন)।

সোমবার (২ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টারস ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তন ‘বাংলাদেশের বন্যা, জলাবদ্ধতা ও ভূমিধ্বস সমাধানে বাপা-বেন সুপারিশমালা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় পরিবেশ নিয়ে কর্মরত এই দুই সংস্থা।

সম্মেলনে বাপা’র পক্ষ থেকে একটি প্রবন্ধ পাঠ করা হয়। এতে বন্যা, জলাবদ্ধতা ও ভূমিধস সমস্যার কারণ ও সমাধান বলা হয়। সুপারিশে জানানো হয়, বেড়িবাঁধ পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ শহরকে বাঁধ দিয়ে পানি নিষ্কাশন পদ্ধতিকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পাকিস্তান আমলে প্রণীত এ ‘অবরোধ পন্থা’ বাংলাদেশের নদীর স্বাভাবিক গতি ব্যাহত করে।

এতে বন্যা সীমার নিচে বসতি স্থাপন উৎসাহিত হয়, বিপর্যয়মূলক বন্যার হুমকি তৈরি হয়, পলির অভাবে জমির অবনমন হয়, খালবিল ও জলাশয় ভরাট ও দূষণের হুমকি হয়। আর এসব কিছু জলাবদ্ধতা তৈরি করে বলে জানান বক্তারা।

বাপা’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব সম্মেলনে প্রবন্ধ পাঠ করেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলগুলো এখন আমাদের জীবনে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে। আমরা চাইলেও তা অস্বীকার করতে পারি না। তাই এখনই আমাদের সমস্যাগুলোকে স্বীকার করতে হবে।

তিনি আরও জানান, ষাটের দশকে ঢাকার অদূরে তৈরি ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি)’ বাঁধের এলাকা প্রমাণ করে, এটি আমাদের দেশের জন্য কতটা অকার্যকর ব্যবস্থা। তারপরও এখন পর্যন্ত প্রতিবছর উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ২০ শতাংশ এই পন্থা অনুসরণ করে প্রকল্প নির্মাণ ও চালু রাখা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, আমাদের দেশীয় প্রযুক্তির নিচু উচ্চতার সাময়িক বাঁধ যা অষ্টমাসী বাঁধ নামে পরিচিত, তা হতে পারে আমাদের বন্যা সমস্যার সমাধান। এর ফলে আমরা প্রয়োজনমতো পানি, পলি- দু’টোই পাই; আবার আমাদের জলাবদ্ধতা সমস্যারও নিরসন হয়।

শুধু বন্যা বা জলাবদ্ধতা নয়, ভূমিধসের জন্যও প্রাকৃতিক নিয়মকে অস্বীকার করে আরোপিত পদ্ধতি প্রয়োগকে দায়ী করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সুপারিশে বলা হয়, পাহাড়ে সমতলের মানুষদের অবস্থান উৎসাহিত করার সময় তাদের পাহাড়ে বসবাসের নিয়ম সম্পর্কে সচেতন করা হয়নি। পাহাড়ের বাসিন্দারা মাচা বানিয়ে বাস করে। এতে পাহাড়ের মাটির ওপরে থাকা ঝোঁপ-জঙ্গল রক্ষা পায়। সমতলের মানুষদের উঠান নিয়মে তৈরি বাড়ি, লাঙল দিয়ে জমি চাষ ও গাছপালা উজার পাহাড় ধসকে বাড়িয়ে দিয়েছে।

এ ছাড়াও এ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিশাল হাওর অঞ্চলকে একটি বৈচিত্র্যময় ভিন্ন প্রকৃতির অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তার উপযোগী রক্ষা ব্যবস্থাপনা তৈরি ও প্রয়োগের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের জাতীয় নদী কনভেনশন অনুযায়ী, নদী বিষয়ক প্রস্তাব বাস্তবায়ন এবং ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরশনে ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান’ বাস্তবায়নের জোর দেওয়া হয়।

চলতি বছর জানুয়ারিতে বাপা ও বেন-এর উদ্যোগে এবং অন্যান্য পরিবেশ সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সহযগিতায় ‘বন্যা, জলাবদ্ধতা এবং ভূমিধ্বস’ বিষয়ক বিশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেই সম্মেলনের সিদ্ধান্ত ও বিশেষজ্ঞদের আলোচনার ভিত্তিতে বেন ও বাপা বন্যা, জলাবদ্ধতা ও ভূমিধস নিরসনে এসব সুপারিশ করে।

বাপা সভাপতি অধ্যাপক এম ফিরোজ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মলনে আরো উপস্থিত ছিলে বাপা সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন ও বাপা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমএ/টিআর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গোলমরিচ যেভাবে দ্রুত ওজন কমায়
২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৫১

সম্পর্কিত খবর