শরীয়তপুর: চাঁদপুর-শরীয়তপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে আটকা পড়েছে পণ্যবাহী ট্রাক, যাত্রীবাহী বাসসহ কয়েক শতাধিক যানবাহন। এতে করে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দিবাগত রাত থেকেই বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। ভেদরগঞ্জ উপজেলার নরসিংহপুর ফেরিঘাটে ইজারা নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে দ্বন্দ্বের জেরে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতা মমিন দিদার গত এক বছর ধরে নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ইজারাদার ছিলেন। গত ১ জুলাই নতুন ইজারাদার হন সখিপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মাইদুল ইসলাম জিসান বালা। ফেরীঘাট পরিচালনাকে কেন্দ্র করে মাইদুল ইসলাম জিসান বালা ও মমিন দিদারের মধ্যে ইজারা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এদিকে মমিন দিদার আদালতে ৭৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেন। সেই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার মমিন দিদার ফেরিঘাট দখলে নেন। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার রাতে দুই পক্ষ ঘাট এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে।
ফলে রাত থেকেই ধীরে ধীরে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হয়, যা সকাল নাগাদ কয়েক কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত হয়। ভোর থেকে যাত্রীরা অসহায় হয়ে রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ ব্যাপারে মাইদুল ইসলাম জিসান বালা বলেন, ‘আমরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী গত ১ জুলাই থেকে ফেরী ঘাটের ইজারা পেয়ে কাজ করছি। হঠাৎ করে বৃহস্পতিবার রাতে পূর্বের ইজারাদার চাঁদাবাজী শুরু করলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যানবাহনগুলোর চালক ও শ্রমিকরা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে সড়কের পাশে অবস্থান করছে।’
অপরদিকে মমিন দিদার বলেন, ‘আমি বিআইডব্লিউটিএ-র বিরুদ্ধে মামলা করে রায় পেয়েছি। তারা (জিসান বালা) গাড়ি তাদের বাড়ির সামনে আটকে রেখেছেন। ঘাট যদি তাদের হয় ঘাটে আসুক।’
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর নরসিংহপুর ফেরীঘাটের ব্যবস্থাপক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘ফেরিঘাটে স্থানীয় প্রভাবশালী দুই গ্রুপের ফেরিঘাট ইজারাদার দ্বন্দ্ব নিয়ে আজ রাত ৩টা হতে প্রায় শতাধিক যানবাহন আটকা পড়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীসহ যানবাহনের ড্রাইভার চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি। যার ফলে এখনো স্বাভাবিক যানবাহন আটকা পড়েছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। অন্যায়ভাবে এ ধরনের কাজ করায় আমি তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপাশি এ ধরনের চাঁদাবাজী বন্ধে ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
এ ব্যাপারে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দুই পক্ষের মধ্যকার সমস্যাটি নিরসনের চেষ্টা চলছে। আর পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পুলিশ কাজ করছে।’