Friday 18 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশ আজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ জুলাই ২০২৫ ০০:১৭

ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: রাজধানীতে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জাতীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথমবারের মতো দলটির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুর ২টায় মূল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সমাবেশ ঘিরে অন্তত ১০ লাখ মানুষের উপস্থিতি ঘিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সবধরনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে দলটি।

জামায়াতে ইসলামীর এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে উৎকণ্ঠার যেন শেষ নেই রাজনৈতিক অঙ্গনে। চায়ের দোকান থেকে সবস্তরের মানুষের মধ্যে চলছে এই দলটির রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে আলোচনা। নির্বাচনের আগে এই সমাবেশ অর্থাৎ জামায়াতের শক্তি প্রদর্শনী নির্বাচনে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায় বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এ ছাড়াও এর অন্তরালে কৌশলগত নানা হিসাব-নিকাশ রয়েছে বলে মনে করেন তারা।

বিজ্ঞাপন

জাতীয় এই সমাবেশের মাধ্যমে মূলত অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে নিজেদের শক্তিমত্তার বার্তা দিতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশের মাধ্যমে সাত দফা দাবি আদায় করতে চায় জামায়াত।

দাবিগুলো হলো— অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতকরণ, সকল গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন ও এক কোটিরও বেশি প্রবাসী ভোটারদের ভোটাধিকার নিশ্চিতকরণ।

এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আজ থেকেই ঢাকা আসছেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের মাধ্যমে আজ সকাল থেকেই দূরদূরান্ত থেকে ঢাকায় আসছেন তারা। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় যেতে সর্বোচ্চ শক্তি এই সমাবেশে প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত জামায়াত।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সমাবেশ ঘিরে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সমাবেশস্থলে ২০টি পয়েন্টে দলটির প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। সমাবেশে নারী পুরুষসহ অন্তত ১০ লাখ মানুষ উপস্থিতি হওয়ার কথাও জানিয়েছেন তারা।

সমাবেশকে ঘিরে ১১টি নির্দেশনা দিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতীয় সমাবেশ-২৫ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মিয়া গোলাম পরওয়ার।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে— ‘সকলকে সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছানোর চেষ্টা করা ও মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ করা। সম্মানিত আমিরে জামায়াতের বক্তব্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি নিজস্ব স্থান থেকে সরবেন না। বৃষ্টি হলেও যার যার অবস্থানে বসে থাকতে হবে। জাতীয় পতাকা ব্যতিত ভিন্ন কোনো পতাকা প্রদর্শন করা যাবে না। মিছিল নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া যাবে না।’

যাতায়াত ও সমাবেশস্থলে বয়স্ক ও শিশুদের (যদি আসে) অগ্রাধিকার দেওয়া। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশে ১৫টি মেডিকেল বুথ ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার থাকবেন। কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়লে পার্শ্ববর্তী মেডিকেল বুথ থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন। অভ্যর্থনা কেন্দ্র ও সমাবেশস্থলে আমাদের পোশাকধারী স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। শৃঙ্খলার স্বার্থে তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। প্রত্যেকে সম্ভব হলে চাহিদা মতো খাবার পানির বোতল সংগ্রহে রাখবেন। সমাবেশের কার্যক্রম শেষ হলে দ্রুতসময়ে সভাস্থল ত্যাগ করা। জরুরি প্রয়োজনে নিম্নোক্ত দায়িত্বশীলদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।

এদিকে, সমাবেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সম্ভাব্য কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, র‍্যাব ও গোয়েন্দা সদস্য মোতায়েন থাকবে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘যেকোনো রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিকভাবে কর্মসূচি পালন করতে পারে, তবে জনদুর্ভোগ ও বিশৃঙ্খলা রোধে আমরা তৎপর থাকবো।’

সারাবাংলা/এমএইচ/এইচআই

জামায়াত প্রথমবারের মতো সমাবেশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর