চট্টগ্রাম ব্যুরো: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় দলটির নেতাকর্মীদের জোর প্রচার-প্রচারণা চলছে। নগরীর পাশাপাশি প্রত্যেক উপজেলা থেকে বিপুল জনসমাগমের টার্গেট নিয়েছে দলটি। এনসিপি নেতারা জানিয়েছেন, পদযাত্রায় দশ হাজারেরও বেশি লোক সমাগম হবে বলে তারা আশা করছেন।
রোববার (২০ জুলাই) বিকেল সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রাম নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে এনসিপির পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এনসিপির চট্টগ্রাম জেলা সংগঠক মো. রাফসান জানি সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা থেকে পদযাত্রা করে এনসিপি নেতাকর্মীরা প্রথমে বহদ্দারহাট পর্যন্ত আসবেন। সেখানে পথসভা শেষ করে যাবেন নগরীর দুই নম্বর গেইটে বিপ্লব উদ্যানে। সেখানে মূল জমায়েত হবে। সেখানে সমাবেশ শেষ করে রাতে নিউমার্কেট মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত তাদের আছে। এরপর এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা রোববার রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
পদযাত্রা কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার (১৮ জুলাই) থেকে চট্টগ্রাম নগরী ও বিভিন্ন উপজেলায় প্রচারণা শুরু হয়েছে। গত দুদিন ধরে অটোরিকশা, পিকআপভ্যান, ট্রাকে মাইক-সাউন্ডবক্স লাগিয়ে চলছে বিরামহীন প্রচারণা। এ ছাড়া বিলবোর্ড এবং ব্যানারের মাধ্যমেও পদযাত্রার কর্মসূচি প্রচার করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগরীর ও বিভিন্ন উপজেলা মিলে প্রায় সাড়ে তিনশ ব্যানার লাগানো হয়েছে বলে রাফসান জানি জানান। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমাদের তিনটি সাংগঠনিক জেলা- উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগর। এর মধ্যে শুধু মহানগরেই আমরা কর্মসূচি দিয়েছি। যেহেতু উত্তের-দক্ষিণে আমাদের পদযাত্রা কর্মসূচি নেই, সেজন্য আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রত্যেক উপজেলা থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক আমাদের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষকে নিয়ে আসা। এ ব্যাপারে সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। নেতাকর্মীরা নিজেরাই গাড়িভাড়া করে আসার প্রস্তুতি নিয়েছেন। নগরী থেকেও সর্বোচ্চ জমায়েত হবে। দশ হাজারের বেশি জনসমাগম হবে বলে আমাদের আশা।’
চট্টগ্রামে পদযাত্রা কর্মসূচিতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনীম জারাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
সারাদেশে ‘জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে শনিবার (১৯ জুলাই) থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কর্মসূচি শুরু করেছে এনসিপি। এজন্য শুক্রবার রাতেই কেন্দ্রীয় নেতারা কক্সবাজারে এসে পৌঁছান। শনিবার সকালে প্রথমে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। শহরের প্রধান সড়ক হয়ে পাবলিক লাইব্রেরির শহিদ দৌলত মাঠে সমাবেশ করে এনসিপি। এরপর চকরিয়া উপজেলায় গিয়ে সমাবেশ করে বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন নেতারা।
বান্দরবান থেকে রাতের মধ্যে চট্টগ্রাম নগরীতে পৌঁছাবেন এনসিপি নেতারা। রোববার সকাল ৮টায় রাঙামাটির উদ্দেশে রওনা দেবেন। সেখানে পদযাত্রা ও সমাবেশ শেষ করে বিকেল সাড়ে তিনটার মধ্যে পৌঁছাবেন নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথায়। এরপর সেখান থেকে পদযাত্রা শুরু হবে।
এদিকে শনিবার চকরিয়ায় সমাবেশ করতে গিয়ে এনসিপি নেতারা হামলার মুখে পড়েন। এর আগে, গোপলগঞ্জেও এনসিপি নেতাদের ওপর হামলা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামেও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা আছে নেতাদের মধ্যে।
গত ১৭ জুলাই চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আশঙ্কার কথা জানিয়ে এনসিপির চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল হাসান আরিফ বলেন, ‘চট্টগ্রামে হামলার শঙ্কার বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে। চট্টগ্রামে এরকম কিছু হলে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা প্রতিহত করবে। গোপালগঞ্জের পরে আমরা মনে করি না আওয়ামী লীগ আর নীরব ভূমিকায় আছে। এটা রাজনৈতিক দলগুলোর সামগ্রিক ব্যর্থতা বলে মনে করি। গোপালগঞ্জের পরে নিরাপত্তা নিয়ে আমরা নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য হচ্ছি।’