Saturday 19 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কোনো ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যেন ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ না পায়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ জুলাই ২০২৫ ২১:৫৫ | আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৫ ২৩:০৮

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান

ঢাকা: আবেগতাড়িত বা কোনো ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যেন দেশে ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ না পায়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় ফার্মগেট খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। জুলাই শহিদদের স্মরণে এই সভা আয়োজন করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।

তারেক রহমান বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার মিশনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে। সুতরাং আপনাদের, আমাদের, আমাদের সকলের কোনো আবেগতাড়িত বা ভুল সিদ্ধান্তের কারণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে ভবিষ্যতে আর যাতে কোনো চরমপন্থা, কিংম্বা ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসিত হওয়ার সুযোগ না পায়, সে ব্যাপারে আপনাদেরকে তথা সমগ্র দেশবাসীকে সতর্ক এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময় দেশে সংঘটিত কিছু নৃশংস ঘটনা জনমনে অন্তর্বর্তী সরকারের সক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো একটি অংশের সহযোগিতায় কেউ কেউ দেশে উদ্দেশ্যমূলক পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে কি না?— এ বিষয়টিও জনমনে জিজ্ঞাসা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব কি না, কোনো কোনো মহল থকে এমন ধরনের প্রশ্ন উত্থাপন বিচ্ছিন্ন বক্তব্য হিসেবে বোধহয় দেখার আর কোনো সুযোগ নেই।’

খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণ সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন তারেক রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে কেউ সময়ক্ষেপণ করতে চাইছে কি না— এ ব্যাপারেও সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তারেক রহমান।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আরও স্বচ্ছ ও সাহসী ভূমিকা রাখুন। বাংলাদেশে গণতন্ত্রে বিশ্বাসী জনগণ আপনাদের পাশে থাকবে। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের পাশে থাকবে, যদি আপনাদের ভূমিকা আরও স্বচ্ছ ও সাহসী হয়।’

গণঅভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভূমিকা, জুলাই অভ্যুত্থানে যারা শহিদ, আহত এবং এখনো চিকিৎসাধীন আছেন, তাদের প্রত্যেকের অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করি, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ মুক্তিযোদ্ধারা যেভাবে মানুষের হৃদয়ে স্মরণী, বরণীয় হয়ে রয়েছেন এবং থাকবেন। ঠিক একইভাবে ২০২৪ সালে দেশ ও জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে শহিদরাও আজীবন জনগণের হৃদয়ে স্মরণীয়, বরণীয় হয়ে থাকবেন।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর ১৬ জুলাই রংপুরে আবু সাঈদ, চট্টগ্রামে ওয়াসিমসহ একই দিনে ছয়জন শহিদ হওয়ার মাধ্যমে মাফিয়ার সরকারের পতন ঘণ্টা বেজে উঠেছিল। ১৬ জুলাইয়ের পর থেকে আন্দোলন আর কোটা সংস্কারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন মাফিয়া সরকার বেপরোয়া হত্যা, আর নির্মম দমন-পীড়ন শুরু করেছিল। সেই মাফিয়া সরকারের গুলি উপেক্ষা করে ১৮ জুলাই দলমত নির্বিশেষে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যেভাবে রাজপথে সাহসের সঙ্গে নেমে এসেছে, যেভাবে রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে— একজন রাজনীতি কর্মী হিসেবে সেদিনই আমার চূড়ান্ত বিশ্বাস জন্মেছিল মাফিয়া সরকারের পতন এখন শুধু সময়ের ব্যাপারে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘একটি ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক এবং তাবেদারমুক্ত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহিদদের প্রতি আমরা সতিক্যার রূপে সম্মান এবং শ্রদ্ধা জানাতে পারি। হাজার শহিদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়বার পূর্ব শর্তই হচ্ছে জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে এ দেশে এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা থাকা জরুরি, যেখানে প্রতিটি ভোটার, নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারবে। বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদের কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে জগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রয়োগ এবং চর্চার কোনো বিকল্প নাই।’

সারাবাংলা/এজেড/এইচআই

টপ নিউজ তারেক রহমান ফ্যাসিবাদ বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর