ঢাকা: সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে আমরা দেশকে নতুনভাবে ফিরে পেয়েছি। এবার সময় এসেছে দেশটাকে নতুনভাবে গড়ে তোলার।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই শিল্পের বিকাশ, চাই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শিল্প গড়ে তুলতে। আর এ জন্য দরকার মালিক-শ্রমিক উভয়ের সম্মিলিত প্রয়াস ও দায়িত্বশীল ট্রেড ইউনিয়ন।’
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেলে সাভারের গেন্ডা বালুর মাঠে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা ২০২৫’-এর অংশ হিসেবে শহিদদের স্মরণে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি ২০২৪ সালের ‘জুলাই আন্দোলন’ এবং এতে অংশ নেওয়া শহিদ শ্রমিকদের স্মরণে শ্রদ্ধা ও স্যালুট জানান।
শারমীন মুরশিদ বলেন, ‘আমরা এমন ট্রেড ইউনিয়ন চাই, যা রাজনৈতিক হাতিয়ার নয়, বরং শিল্পের কণ্ঠস্বর হবে। রাজনৈতিক দখলদারিত্ব থেকে ইউনিয়নগুলোকে মুক্ত করে এগুলোকে দায়িত্বশীল ও ন্যায়ভিত্তিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি বিগত সরকারের স্বচ্ছতা ও সুব্যবস্থার ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘৫৪ বছরে বিগত সরকার জনগণকে রাজনীতির নামে প্রতারিত করেছে। শ্রমিকদের কল্যাণে রাজনীতি হতে হবে কার্যকর ও ইতিবাচক।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শিল্প হতে হবে সংকীর্ণ দলীয় রাজনীতি মুক্ত। রাজনীতি হোক শিল্পের কল্যাণ ও দেশের অগ্রগতির জন্য।’ শ্রমিক-মালিক সম্পর্কের ভারসাম্য নিশ্চিত করতে তিনি মালিকপক্ষের প্রতি দায়িত্বশীল ব্যবস্থাপনার আহ্বান জানান।
নারী শ্রমিকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই দেশের গার্মেন্টস সেক্টরে ৮০ শতাংশ মেয়ে কাজ করছে। তারা আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রধান চালিকাশক্তি। তাদের সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় কাজ করে যাবে।’
শ্রমিক সমাবেশে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান-এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ (এনডিসি, পিএসসি), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতারসহ বিভিন্ন শ্রমিক নেতা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলার বিভাগীয় কমিশনার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিরা এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা।