কুমিল্লা: ফার্মেসি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে গত বুধবার (১৬ জুলাই) থেকে ক্লাস-পরীক্ষা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রেখে টানা কর্মসূচি পালন করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিভাগের শ্রেণিকক্ষে তালা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২০ জুলাই) বেলা ১২টায় বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন স্লোগানও দিয়েছেন তারা। মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, দীর্ঘ দেড় বছর যাবৎ মাত্র পাঁচজন শিক্ষক দিয়ে প্রদীপের নিভু নিভু আলোয় ন্যায় ল্যাব, ক্লাস-পরীক্ষাসহ অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালানো হয়েছে। বিভাগে বর্তমানে আটটি ব্যাচের পাঠদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে স্বল্প শিক্ষক দিয়ে গুনগত মানের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে বাধ্য হয়ে ক্লাস-পরীক্ষাসহ যাবতীয় অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থীরা জানান, শিক্ষক সংকটের কারণে তাদের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গত বুধবার শিক্ষক নিয়োগের জন্য অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাও দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সাড়া মেলেনি। এবার তাদের পরবর্তী কার্যক্রম ভিসি অফিস এবং ডিন অফিস তালাবদ্ধ করে দিবেন তারা। তাদের দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঁচজন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নেওয়ার ব্যবস্থা করা। যতদিন এই সংকটের সমাধান না হবে ততদিন তারা তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবেন।
ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম ভুঁইয়া বলেন, “আমরা আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ইউজিসির কাছে এই দাবি করতে যে আমাদের ফার্মেসি বিভাগ মাত্র পাঁচজন শিক্ষক দিয়ে চলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা ডিপার্টমেন্ট পাঁচজন শিক্ষক দিয়ে চলে এর চেয়ে নির্লজ্জ আর কিছু হতে পারে না।”
ফার্মেসি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হিমু বলেন, “আমরা ইউজিসির কাছে প্রশ্ন করতে চাই, “তারা যদি আমাদের শিক্ষক নিয়োগ না দিতে পারে তারা আসলে কি করতে পারে?” তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জানতে চান, “ প্রশাসন যদি শিক্ষক নিয়োগ না দিতে পারে, তাহলে কেন নতুন বছরে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হচ্ছে? যেহেতু আজকে আমাদের আল্টিমেটামের শেষ দিন, প্রশাসন যদি আজকের মধ্যে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে, আমরা ডিন অফিস, সাইন্স ফ্যাকাল্টির অফিস এবং ভিসির দফতরে তালা লাগিয়ে দিব ।”
উল্লেখ্য, ফার্মেসি বিভাগের ১২ জন শিক্ষকের মধ্যে সাতজন শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন। ফলে মাত্র পাঁচজন শিক্ষক দিয়ে কোনোরকমে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বিভাগটি।