ঢাকা: পরিস্থিতিগত কারণে গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী গুলি করেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের পর ওই জেলায় জারি করা ১৪৪ ধারা পর্যায়ক্রমে উঠিয়ে নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
রোববার (২০ জুলাই) বিকেলে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পর উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গুলি ছোড়া নিয়ে এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘যে সময় যে পরিস্থিতি ওই ব্যবস্থা নিতে হবে।’
গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষ চলাকালীন পুলিশ এবং সেনাবাহিনীকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। সংঘর্ষের পর ওই জেলায় কারফিউ জারি করে সরকার। এখন কারফিউ প্রত্যাহার করে ১৪৪ ধারা জারি রাখা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গোপালগঞ্জে ধীরে ধীরে ১৪৪ ধারা উঠিয়ে নেওয়া হবে। অন্যায় করলে সে গ্রেফতার হবে। আমি একটি কথাই বলেছি, কোনো অবস্থায় যেন দুষ্কৃতকারী ছাড়া না পায়। আর যে অপরাধ করেনি সে যেন ধরা না পড়ে।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গোপালগঞ্জে ঘটনা যে ঘটেছে সেটি তো আমি অস্বীকার করছি না। এটা তো রাজনীতি। রাজনীতি করতে গেলে তো অনেক কিছু অনেক সময়… আগে যখন আমরাও (রাজনীতি) করেছি তখন ইউনিভার্সিটিতে তো কত ধরনের ঘটনা হয়েছে। ঘটনার পরে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না সেটি হচ্ছে আমাদের কথা, আমরা ব্যবস্থা নিতে পারছি কি না।’
গোপালগঞ্জে মৃত্যুর ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি জানিয়ে একজন সাংবাদিক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ মামলা করবে কি করবে না, একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, তারা বলবে। গোপালগঞ্জে গণগ্রেফতার হচ্ছে না। যারা অন্যায় করেছে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।’
রোববার (২০ জুলাই) নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হরতাল নিয়ে এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তরফ থেকে একটি হরতাল ডাকা হয়েছে, হরতাল হয়েছে কি না সেটা বলেন? দুটি গাড়ি-ই পোড়ানো হয়েছে সত্যি কথা। নাশকতাটা হয়েছে। অন্যান্য হরতাল কল (আহ্বান) করার সময় এই নাশকতাটা আরও বেশি হয়েছে। তার থেকে আমরা (নাশকতার পরিমাণ) অনেকটা কমিয়ে আনতে পেরেছি কি না, সেটি আপনারা দেখবেন।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগামী ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারবে কি না? এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না কেন? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেই প্রস্তুতি, আরও তো অনেক সময় রয়ে গেছে। আমাদের প্রস্তুতি রয়ে গেছে, আমাদের ট্রেনিং হচ্ছে, আমরা ট্রেনিং করিয়ে দিচ্ছি। আমরা তো প্রস্তুতি নিয়ে নিচ্ছি। আল্লাহ দিলে (নির্বাচন) করতে কোনো অসুবিধা হবে না।’
‘আজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে আমরা শুনলাম তারা কীভাবে কাজ করছেন, আগে কি পরিস্থিতি ছিল, এখন কি পরিস্থিতি রয়েছে। তারা ফিডব্যাক দিয়েছেন, তারা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখনকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তারা বললেন যে অনেক উন্নতি হয়েছে। এখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি হয়নি সেটি আপনারা বলতে পারবেন’- যোগ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।