ঢাকা: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম, পিএইচডি বলেন, ‘আমাদেরও বেড়ে ওঠার জন্য বাবা মার ওপর কৃতজ্ঞ থাকা জরুরি। সামান্য কিছুর জন্য তাদের ওপর অকৃতজ্ঞ হওয়া যাবে না।’
রোববার (২০ জুলাই) সমাজকর্ম বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত ‘Addressing violence: mental wellness for Bangladeshi street children’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরোও বলেন, ‘আমরা এমন একটা সোসাইটি করতে পারি কিনা যেখানে সবাই সমান সুযোগ পাবে। গবেষণাগুলো এমন হওয়া দরকার যেন সকলেই সমান হয় কিন্তু আমরা তেমন কিছুই করতে পারছি না। আমাদের মাধ্যমিকে প্রায় ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী ঝড়ে পড়ে। অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ বিভিন্ন কারণ রয়েছে। কি জন্য এমন পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি। এই বিষয়ে সামাজিকীকরণসহ বিভিন্ন বিষয় জড়িত রয়েছে।’
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে কি-নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. হাসান রেজা এবং যুক্তরাজ্যের ওপেন ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি মেম্বার ও মেন্টাল হেলথ্ ক্লিনিশিয়ান ড. শরীফ হায়দার। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিভাগের অধ্যাপক ড. মহসীন রেজা।
ড. হাসান রেজা তার গবেষণা উপস্থাপনায় সদরঘাট, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ ঢাকার আশপাশের পথশিশুদের শারীরিক,মানসিক ও যৌন হয়রানিমূলক বিভিন্ন তথ্য নিয়ে গবেষণা করেন। গবেষণায় তিনি প্রায় ছয় শতাধিক পথশিশুর নমুনা নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেন। তার গবেষণায় ২৭ শতাংশ শিশু পিতামাতার পরিচয়হীনতা, ঘৃণিত কাজ যেমন নোংরা ময়লা, বমি পরিস্কারের কাজ এবং মজুরি না দেওয়ার বিষয়বস্তুসহ যৌন হয়রানি ও গ্যাং রেপের মত ঘটনার উপস্থিতি পাওয়া যায়।
হাসান রেজা বলেন, ‘ডাটা কালেকশনে তাদের বিভিন্ন গল্প পাওয়া যায় যার ভেতর শারীরিক, মানসিক ও যৌন হয়রানিই বেশি। এছাড়া পুলিশের মাধ্যমেও তারা যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন।’
পথশিশুদের নিয়ে কাজ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই শিশুদের নিয়েই আমার ক্যারিয়ার বানিয়েছি। পিএইচডি করেছি, সহযোগী অধ্যাপক হয়েছি। তাদের জন্য কিছুই করতে পারিনি। আমার এই তাড়না থেকে তাদের নিয়ে গবেষণা করছি।’
সেমিনারে পথশিশুদের মেন্টাল হেলথ্ নিয়ে গবেষণা উপস্থাপনা করেন ড. শরীফ হায়দার। এছাড়া তিনি শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ ও কৌশল প্রদান করেন।