Sunday 20 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘রাজার ছেলে রাজা’ এই বাংলাদেশে আর হবে না: হাসনাত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ জুলাই ২০২৫ ২১:৩৩ | আপডেট: ২১ জুলাই ২০২৫ ০০:৫৭

চট্টগ্রাম: ‘রাজার ছেলে রাজা হবে, প্রজার ছেলে প্রজা থাকবে- এই বাংলাদেশে সেটা আর হবে না’, এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।

রোববার (২০ জুলাই) রাতে চট্টগ্রাম নগরীর বিপ্লব উদ্যানে এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি একথা বলেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের এখন রাষ্ট্র গঠনে মনোযোগ দিতে হবে। যারা আমাদের শোষণ করেছে, তারা জানতো তারা একদিন এদেশে থাকতে পারবে না। সেজন্য তারা কেউ ভারতে পালিয়ে গেছে, কেউ আমেরিকায় চলে গেছে আর কেউ লন্ডনে। সেখানে তারা তাদের সেকেন্ড হোম বানিয়েছে, থার্ড হোম বানিয়েছে। কিন্তু আমরা যারা বাংলাদেশে থাকবো, আমাদের বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে গঠন করতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ গঠনের দায়িত্ব তরুণ প্রজন্মকে কাঁধে তুলে নিতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই তরুণ প্রজন্মকে অর্থ দিয়ে কেনা যায় না। এই তরুণ প্রজন্মকে লোভ দেখিয়ে কেনা যায় না। হাসিনা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু কিনতে পারে নাই। এই তরুণ প্রজন্ম চাইলে ইতিহাস তৈরি হবে। এই ভঙ্গুর রাষ্ট্র গঠনে তরুণদের সামনে এগিয়ে আসতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, এখন যেসব করছি সেগুলোর ফলাফল আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পাবে। আমাদের একটা নীতিনির্ভর, ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র লাগবে। একটা গ্রহণযোগ্য ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।’

বিভাজন তৈরির চেষ্টার বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত বলেন, ‘অনেকে আমাদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করার চেষ্টা করবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা করবে। আমরা বলতে চাই- এ বাংলাদেশ কারও বাপের নয়। আমরা বাংলাদেশকে কারও কাছে ইজারা দেয়নি। এই বাংলাদেশ জনতার।’

‘এই বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষ ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে তার ন্যায্য হিস্যা নিয়ে থাকবে। রাজার ছেলে রাজা হবে, প্রজার ছেলে প্রজা থাকবে- এ বাংলাদেশে সেটা আর হবে না। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে।’

গ্রুপিং-দলাদলি বাদ দিয়ে জেলা-উপজেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে এনসিপিকে শক্তিশালী করার আহ্বান জানান হাসনাত আবদুল্লাহ।

সমাবেশে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে অন্তত ১২টি আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টি জয়লাভ করবে।’

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ ও জোবায়রুল হাসান আরিফ, যুগ্ম সদস্য সচিব সাগুপ্তা বুশরা ও মীর আরশাদুল হক, যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান আলী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সালমা নিভা এবং জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারেক আলী।

এসময় এনসিপি নেতাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারি, সামান্তা শারমিন, ডা. তাসনীম জারা, তাসনুভা আলম।

এর আগে, রোববার (২০ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরীর বহদ্দারহাট মোড়ে জমায়েতের পর পদযাত্রা নিয়ে ষোলশহর দুই নম্বর গেইটে বিপ্লব উদ্যানে যান এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা।

সারাদেশে ‘জুলাই পদযাত্রা’র অংশ হিসেবে শনিবার (১৯ জুলাই) থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে কর্মসূচি শুরু করেছে এনসিপি। এজন্য শুক্রবার রাতেই কেন্দ্রীয় নেতারা কক্সবাজারে এসে পৌঁছান। শনিবার সকালে প্রথমে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। শহরের প্রধান সড়ক হয়ে পাবলিক লাইব্রেরির শহিদ দৌলত মাঠে সমাবেশ করে এনসিপি। এরপর চকরিয়া উপজেলায় গিয়ে সমাবেশ করে বান্দরবানে গিয়ে কর্মসূচি পালন করেন নেতারা।

বান্দরবান থেকে রাতে চট্টগ্রাম নগরীতে ফেরেন এনসিপি নেতারা। আজ (রোববার) সকালে রাঙামাটিতে কর্মসূচি শেষ করে সরাসরি চট্টগ্রাম নগরীতে আসেন এনসিপি নেতারা। চট্টগ্রাম থেকে সোমবার সকালে তারা খাগড়াছড়িতে গিয়ে পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নেবেন।

সারাবাংলা/আরডি/এসএস

বাংলাদেশ রাজার ছেলে রাজা হাসনাত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর