ঢাকা: একটি স্কুলে দুর্ঘটনা ঘটবে। সেই ঘটনায় অনেক সংখ্যক শিশু মারা যাবে। স্কুলটি হবে নিম্নশ্রেণির। এটি হবে একটি বড় ধরনের দুর্যোগ। নাইজেরিয়ান একটি হ্যাকার গ্রুপ অ্যানোনিমাস নামে একটি পেজ এরকম পোস্ট দেওয়ার ১০ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশি স্কুল উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের ভবনে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে।
রোববার (২০ জুলাই) দিবাগত রাত ২টা ৫০ মিনিটে অ্যানোনিমাস পেজের ওই পোস্টে বলা হয়েছে, একটি স্কুল ভবন ধসে যাবে এবং সেখানে অনেক শিশুর মৃত্যু হবে। আমরা সেই ভয়াবহ বিপদ ধেয়ে আসছে। আমরা সেটি দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।
আইএসপির এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান উত্তরা মাইলস্টোন কলেজের ২১ জুলাই দুপুর ১টা ১৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানটি ১ টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলা এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) এ কে খন্দকার ঘাটি থেকে উড্ডয়ন করে।
আকাশে অন্তত ১৩ মিনিটের মতো উড়ে বিমানটি। এরপর কিছুক্ষণ পর পাইলট বুঝতে পারেন, বিমানটি তার নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে বিমানটি। তখন কন্ট্রোল রুমে জানালে কন্ট্রোল রুম থেকে বিমানটি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু তিনি সব শেষ পর্যন্ত বিমানটি রক্ষার জন্য চেষ্টা করছিলেন। এরপর কন্ট্রোল রুম থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে বিমানটি মাইলস্টোন স্কুলের একটি টিনশেড দুই তলা ভবনের ওপর আচড়ে পড়ে।
বিমান বিধ্বস্তের পর সেখানে থেকে দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিশু শিক্ষার্থীরা স্কুল ছুটি শেষে কেউ বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আবার কেউ কেউ কোচিং করার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এসময় আগুনে পুড়ে অনেকের মৃত্যু হয় এবং বহু আহত হয়েছে।
আইএসপিআর এর সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ২০ জনে। আর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৬৪ জন। বার্ন ইউনিটে ভর্তি ৭০ জনের মধ্যে বেশিরভাগেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দুর্ঘটনার পর অ্যানোনিমাসের ওই গ্রুপ থেকে আবারও পোস্ট দিয়ে জানানো হয়, ‘আমাদের কথা বিশ্বাস করেননি। এখন দেখেন ঢাকায় একটি স্কুলে বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আমাদের কথাই সত্য হলো।’
অ্যানোনিমাসের ওই পোস্টের পর অনেকে কমেন্টস করেছেন। কেউ এটিকে মিরাকেল বলেছেন আবার অনেকেই এটিকে ফকিরের কেরামতি বলে উল্লেখ করেছেন। তবে ওই পোস্টে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ ছিল না।
কেউ লিখেছেন, সেটি কোন দেশ? আবার কেউ লিখেছেন আল্লাহ শিশুদের রক্ষা করো।
তবে যাই ঘটুক এতগুলো শিশুর মৃত্যু দেখে কেউ স্বাভাবিক থাকতে পারছে না। এটির পেছনে কোন কারণ থাকলে তা তদন্ত করা উচিত বলে মনে করছেন অনেকে।