টাঙ্গাইল: ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী মেহেনাজ আক্তার হুমায়রা ও তানভীর আহমেদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও সখীপুরে নেমে এসেছে শোকের মাতম।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ৯টায় সখীপুর উপজেলার হতেয়া কেরানীপাড়ায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হুমায়রাকে। তার বাবা দেলোয়ার হোসেন মাইলস্টোন স্কুলের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। মেয়ের মৃত্যুর খবরে তিনি ভেঙে পড়েন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার আদরের মেয়ে ছিল হুমায়রা। তাকে হারিয়ে আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। এ শোক আমি সইবো কিভাবে!”
অন্যদিকে, সকাল ১০টায় মির্জাপুর উপজেলার ওয়ার্শি ইউনিয়নের আন্দিপাড়া মাদরাসা মাঠে জানাজা শেষে দাফন করা হয় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদকে। নিহত তানভীর নগরভাতগ্রাম নয়াপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী রুবেল আহমেদের বড় ছেলে। ছোট ভাই তাশফিকও মাইলস্টোন স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
তানভীরের স্বজনরা জানান, সে ক্লাসের ক্যাপ্টেন ছিল। দুর্ঘটনার আগ মুহূর্তে সহপাঠীদের শৃঙ্খলায় দায়িত্ব পালন করছিল। কোচিংয়ের জন্য স্কুলে অবস্থান করায় দুর্ঘটনার শিকার হয় সে। তার স্বপ্ন ছিল বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের। কিন্তু সেই স্বপ্ন চিরতরে থেমে গেল।
তানভীরের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছানোর পরপরই আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর আহাজারিতে হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তার চাচাতো ভাই সজিব বলেন, “চাচা-চাচি ছেলেকে সুশিক্ষিত করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর কথা কেউ কল্পনাও করেনি।”
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম আরিফুল ইসলাম জানান, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। নিহতদের পরিবারের পাশে থেকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।”
এদিকে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর দিয়ে কেন প্রশিক্ষণ বিমান উড়ছিল—এ প্রশ্নের জবাব জাতি জানতে চায়। তারা এ ঘটনায় দোষীদের শনাক্ত করে উপযুক্ত বিচার দাবি করেন।