নাটোর: জেলার বড়াইগ্রামে মাইক্রোবাসে ট্রাকের ধাক্কায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী। এদের মধ্যে সাতজন একই পরিবারের।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কে উপজেলার শ্রীরামপুর আইড়মারী ব্রিজ এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের জাহিদুল ইসলাম (৫৫), তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫০), বোন রোউসনারা আক্তার ইতি (৪৮), চাচাতো বোন আনোয়ারা খাতুন (৫৫), ভাবি আনোয়ারা খাতুন আনু (৫০), শাশুরি আনজুমান আরা (৭০) ও শ্যালিকা সীমা খাতুন (৩৫)। এই ঘটনায় নিহত মাইক্রোবাসের চালক শাহাবুদ্দিন(৪২) একই গ্রামের জয়নাল আবেদিনের ছেলে।
নিহতের স্বজনরা জানান, এদিন সকালে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ধর্মদহ গ্রামের জাহিদুল ইসলাম স্বজনদের নিয়ে নবজাতক নাতি ও পুত্রবধূকে আনতে সিরাজগঞ্জে বেয়াইন বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে উপজেলার আইড়মারী ব্রিজ এলাকায় ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক ভুল লেনে চলে আসে। এতে জাহিদুলের পরিবারকে বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে ঘটনাস্থলেই ৫ জন নিহত ও তিনজন গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অপর দু’জন মারা যান।
নাটোরের পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ‘মাইক্রোবাসটি তার সঠিক লেনে ছিল, কিন্তু ট্রাকটি ভুল লেনে চলে আসায় সংঘর্ষে এতগুলো প্রাণহানি ঘটেছে।’
বনপাড়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘নিহতদের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও মাইক্রোবাসটি জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।’
এদিকে আমাদের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, জাহিদুল ইসলামের দুই ছেলে প্রবাসে থাকেন। তার এক ছেলের স্ত্রী বাবার বাড়ি সিরাজগঞ্জ। সেখানেই সদ্যজাত নাতিকে আনতে যাচ্ছিল সবাই। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবারের সাতজনই মারা যান। এখন ধর্মদহ গ্রামে নিহতদের বাড়িতে প্রতিবেশিরা ভিড় করে আছেন। চলছে স্বজনদের শোকের মাতম। শোকে কেউ কেউ বাকরুদ্ধ।