ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করতে ঢাকায় গোপন মিশন চালানোর অভিযোগ উঠেছে মাগুরার আওয়ামী লীগ নেত্রী জোয়ার্দার স্বর্ণালী ওরাফে স্বর্ণালী জোয়ার্দার রিয়ার বিরুদ্ধে। বসুন্ধরার আবাসিক এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে তৎপরতা চালানোর পাশাপাশি নেতা-কর্মীদের অর্থায়নের অভিযোগও রয়েছে এই রিয়ার বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে একাধিক নামে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ রয়েছে। ঢাকা ও মাগুরার কয়েকটি থানায় প্রতারণা ও মাদকের মামলাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একাধিক ভুক্তভোগীর অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগগুলো থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তদন্তে নেমেছে।
কে এই স্বর্ণালী
মাগুরা শ্রীপুর থানা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বর্ণালী জোয়ার্দার রিয়া ছিলেন মাগুরার ক্ষমতাধর পলাতক সাবেক সাংসদ সাইফুজ্জামান শেখরের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ভাটারা থানা এলাকায় চালিয়েছেন নানা তৎপরতা। জুলাই আন্দোলনে জড়িত একাধিক নেতা-কর্মী জানিয়েছেন, ভাটারার ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ঢাকায় থেকেই ভাটারা এলাকায় শেখ হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখতে চালিয়েছেন নানা তৎপরতা। অর্থ দিয়ে সহযোগিতাও করেছেন তিনি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আর যাননি মাগুরায়। শুধু তাই নয়, বসুন্ধরার নিজের ভাড়া বাসা ছেড়ে রয়েছেন গোপন স্থানে। গোপনে থেকেই সরকারকে অস্থিতিশীল করতে রয়েছেন তৎপর। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের দফতরে জমা দেওয়া অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে।
পলাতক শেখরের ঘনিষ্ঠ এই বান্ধবী রিয়ার বিরুদ্ধে মাগুরায় সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, পতিত সরকারের সময়ে বাসায় ডেকে নিয়ে বিরোধী নেতা-কর্মীদের মারধর, ক্ষমতার অপব্যবহার ও চাঁদাবাজীর অভিযোগে মাগুরার শ্রীপুর থানায় রয়েছে একাধিক মামলা।
ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় ২০ কেজি গাঁজাসহ আটক হয়েছিলেন তার ভাগ্নে। এই গাঁজার চালান ছিলো রিয়ার। এই মামলায়ও তিনি আসামি হয়েছেন। এ ছাড়া গুলশানের ভাটারা থানায় রয়েছে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা। সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরকে নিজের সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত করে গোপনে ভিডিও ধারণের পর ব্ল্যাকমেলিং করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এসব অনৈতিক কর্মে সহযোগিতার তার শরীফুল জোয়ার্দার, ফাহিমা আক্তার, তাপস বিশ্বাস ও খলিল মৃধার সমন্বয়ে রয়েছে তার সিন্ডিকেট। রিয়া জোয়ার্দারের অনৈতিক কর্মের বেশ কয়েকটি ভিডিও এবং অর্থ আদায়ের চেষ্টার অডিও ক্লিপিং এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তবে এসব বিষয় গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এবং ভাটারা থানার ওসিসহ পুলিশ কর্মকর্তারা অবগত থাকলেও রিয়া জোয়ার্দারের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত কারণে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে গুলশানের উপ কমিশনার (ডিসি) তারেক মাহমুদ বলেন, আলোচিত এই প্রতারককে ধরার চেষ্টা অব্যাহত আছে।