Friday 25 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শুক্রবার ভার্চুয়াল বৈঠকের সম্ভাবনা
দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার বিষয়টি ‘সম্পূর্ণ অবান্তর’: বাণিজ্য উপদেষ্টা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ জুলাই ২০২৫ ১৫:২৯ | আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩৪

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন – (ছবি : সংগৃহীত )

ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত পাল্টা শুল্ক কমানোর বিষয়ে দেশটির কাছে লেখা চিঠির জবাব এবং দেশটিতে আবার সফরের আমন্ত্রণের অপেক্ষায় রয়েছে বাংলাদেশ। তবে শুক্রবার (২৫ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দফতর (ইউএসটিআর) এর সঙ্গে বাংলাদেশের একটি ভার্চুয়াল বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন এ কথা জানান।

প্রসঙ্গত বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্কহার কমিয়ে আনার ব্যাপারে দুই দফা আলোচনা হলেও এখনো কোনো অগ্রগতি হয়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা সর্বশেষ অগ্রগতির কতদূর- জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা গত পরশুদিন (মঙ্গলবার, ২২ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রীকে আমাদের করণীয় সম্পর্কে একটি পত্র দিয়েছি। সেখানে আমরা আমাদের অবস্থান সঠিকভাবে তুলে ধরেছি। সক্ষমতার ভিত্তিতে আমাদের যা করণীয়, সেই করণীয় তুলে ধরার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এখন উনাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) জবাব ও আমন্ত্রণের অপেক্ষায় আছি। জবাব ও আমন্ত্রণ পেলে আমাদের নেগোসিয়েশন টিমসহ সবাই একত্রে মিলে আমরা যাব।

বিভিন্ন মাধ্যমে কথা হচ্ছে, বাংলাদেশ নিজের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি বা দেশটিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমার এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য নেই। আপনার মতো আমিও একজন বাংলাদেশি। বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে আমরা কেন কাজ করবো? এটি সম্পূর্ণ অবান্তর প্রশ্ন। যদি তা-ই হতো, তাহলে তো আন্তঃমন্ত্রণালয় মিটিংয়ের দরকার হয় না। নির্দিষ্ট কোনো কিছু মেনে নিয়ে কাজটা করে ফেললেই হয়ে যায়। স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার প্রশ্ন এলে পরিশ্রমের দরকার নেই- বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আগামী ১ আগস্ট থেকে শুল্ক তো কার্যকরের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, আমাদের জন্য যেমন প্রয়োজন যুক্তরাষ্ট্রের জন্যও প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমাদের কর্মকাণ্ডে কোনো স্থবিরতা নেই। কর্মকাণ্ড যথেষ্ট গতিশীলতার সঙ্গে এগোচ্ছে।

এ সময়ের মধ্যে আলোচনার আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ কতটা আশাবাদী- জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমি আপনার (সাংবাদিকদের ইঙ্গিত করে) মত একই বিষয়ে উৎসুক এবং আগ্রহী। আপনি যতটুকু আগ্রহী, আমিও ততটুকুই আগ্রহী।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আমরা হয়তো একটা অনলাইন মিটিংয়ের শিডিউল পাচ্ছি- আজ-কালকের মধ্যে। বিষয়গুলো গতিশীলভাবে এগোচ্ছে বলেই চিঠির ওপর ভিত্তি করে তারা একটি অনলাইন মিটিংয়ের শিডিউল দিয়েছে। অনলাইন মিটিংয়ের ভিত্তিতে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মকাণ্ড করবো। অনলাইন মিটিং সম্ভবত কাল (শুক্রবার) হবে।

শুল্কহার নিয়ে দর কষাকষির বিষয়ে বাংলাদেশ কী প্রত্যাশা করছে- এ বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা প্রত্যাশা করছি ভালো কোনো কিছু। ভালো কোনো কিছু করার ক্ষেত্রে যা করণীয় সেগুলোই আমরা করছি।

শুল্ক ইস্যুতে ১ আগস্টের পরবর্তী সময়েও কি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা হবে- জানতে চাইলে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, অবশ্যই হবে, ইনশাল্লাহ্ হবে।

সর্বশেষ বৈঠকে কোনো ইঙ্গিত পেয়েছিলেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে মনে হয়েছে, আমাদের জন্য হয়তো ভালো কিছু হবে, ইনশাল্লাহ্।

দর কষাকষির জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এটি ব্যবসায়ীদের এখতিয়ার। সরকার কোনো লবিস্ট নিয়োগ করেনি। আপনাদের একটা জিনিস বুঝতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাশনাল ইমারজেন্সির বিনিময়ে কাজটি করছে। এখানে যে কাঠামোর ওপর ঘটনাটা ঘটছে, এ কাঠামোতে লবিস্টদের করার কোনো কিছু আছে কি না, আমি ঠিক জানি না।

তিনি বলেন, আমাদের বিভিন্ন বিষয়ে পরিবর্তন আনতে হবে। এ পরিবর্তনগুলো বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারবে না। পরিবর্তনগুলোতে আন্তঃমন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অনেকগুলো আইনি প্রক্রিয়া আছে। এ আইনি প্রক্রিয়াগুলো একজন লবিস্টের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় বলে আমার ধারণা। আমরা সরকারের প্রায় সব মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করছি। গত ১৫ দিন ধরে দিন-রাত কাজ হয়েছে এটির ওপর।

সারাবাংলা/আরএস

বাণিজ্য উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক