দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের জেরে থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। সংঘাতে থাইল্যান্ডে এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন।
দেশটির স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ইউরো নিউজ।
খবরে জানা গেছে, উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রথম গুলি চালানোর অভিযোগ এনেছে, যা দুই প্রতিবেশীর মধ্যে চলমান উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি করছে।
থাই সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে ৯ জন বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর খবর জানায়। এর মধ্যে সিসাকেত প্রদেশে ৬ জন, সুরিন প্রদেশে ২ জন এবং উবোন রাতচাথানি প্রদেশে ১ জন নিহত হয়েছেন। থাই কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, কমপক্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, কম্বোডিয়া এখনো তাদের হতাহতের সংখ্যা প্রকাশ করেনি। তবে, তারা অভিযোগ করেছে যে থাই যুদ্ধবিমান প্রাচীন প্রেহ বিহার মন্দিরের কাছে একটি সড়কের ওপর বোমা ফেলেছে।
সংঘর্ষটি বৃহস্পতিবার সকালে থাইল্যান্ডের সুরিন প্রদেশ এবং কম্বোডিয়ার ওদ্দার মিয়াঞ্চে প্রদেশের সীমান্তের কাছে অবস্থিত প্রাচীন তা মুয়েন থম মন্দিরের কাছে শুরু হয়।
উল্লেখ্য, এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছে মে মাসে একটি সীমান্ত সংঘর্ষে এক কম্বোডীয় সৈনিকের মৃত্যুর পর থেকে দুই দেশের মধ্যে মাসব্যাপী চলা তীব্র উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে।
থাই সেনাবাহিনী দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার ৬ জন সশস্ত্র কম্বোডীয় সৈনিক তাদের একটি সামরিক স্টেশনের কাছে গুলি চালিয়েছে। অন্যদিকে, কম্বোডিয়া সর্বশেষ সংঘর্ষের জন্য থাইল্যান্ডকে দায়ী করেছে।
বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘থাইল্যান্ডের এই বেপরোয়া ও শত্রুসুলভ কাজের তীব্র নিন্দা’ জানিয়েছে এবং তাদের প্রতি বৈরিতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একই ধরনের বার্তা দিয়েছে, যেখানে তারা কম্বোডিয়াকে এই উত্তেজনা অবসানের জন্য উৎসাহিত করেছে। থাই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘রয়্যাল থাই সরকার কম্বোডিয়াকে সংঘটিত ঘটনার দায়ভার গ্রহণ করতে, বেসামরিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা বন্ধ করতে এবং থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে এমন সমস্ত কার্যকলাপ বন্ধ করতে আহ্বান জানাচ্ছে।’
দুই দেশের মধ্যে এই সীমান্ত বিরোধ এক শতাব্দীরও বেশি আগে ফ্রান্সের কম্বোডিয়া দখলের অবসানের পর শুরু হয়েছিল।