রাজবাড়ী: ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে গড়ে উঠেছিল প্রেমের সম্পর্ক। এরপর সম্পন্ন হয় বিয়ে। প্রায় দেড় মাস সংসার করার পর জানা যায়— নববধূর ছদ্মবেশে থাকা সামিয়া আসলে নারী নয়, একজন পুরুষ।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। শনিবার (২৬ জুলাই) তাকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর আগের দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হয়।
কথিত ‘নববধূর’ নাম সামিয়া। তার প্রকৃত নাম মো. শাহিনুর রহমান। তিনি চট্টগ্রামের আমতলা ঈদগাহ বৌবাজার এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের হাউলি কেউটিল গ্রামের মো. বাদল খানের ছেলে মাহমুদুল হাসান শান্তর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় সামিয়ার। দীর্ঘদিনের প্রেমের পর গত ৭ জুন সামিয়া প্রেমিক শান্তর বাড়িতে চলে আসেন। এরপর উভয় পরিবারের সম্মতিতে, ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। তখন থেকে সামিয়া নববধূ হিসেবে শান্তর পরিবারেই বসবাস করতে থাকেন।
সম্প্রতি, শান্ত ও সামিয়ার আচার-আচরণে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করে। অবশেষে গত শুক্রবার বিকেলে পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা নিশ্চিত হন যে, যাকে তারা এতদিন নববধূ হিসেবে জেনে এসেছেন, সেই সামিয়া আসলে একজন পুরুষ।
এ বিষয়ে মাহমুদুল হাসান শান্ত জানান, ‘ফেসবুকে সামিয়ার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে আমাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে পরিবারের সম্মতিতে আমাদের বিয়ে হয়। তবে সামিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তখন কাবিন নিবন্ধন করা সম্ভব হয়নি।’
শান্ত আরও বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই তার আচরণ বেশ রহস্যজনক ছিল। আমি যখনই তার কাছে যেতে চাইতাম, সে বলতো, আমি এখন অসুস্থ। ডাক্তার আপাতত কাছে আসতে নিষেধ করেছেন।’ গতকাল (শুক্রবার) তার আসল পরিচয় ধরা পড়ে, জানতে পারি সে আসলে একজন পুরুষ।’
মো. শাহিনুর রহমান ওরফে সামিয়া বলেন, ‘শান্তর সঙ্গে যা করেছি সেটা অন্যায় হয়েছে। এটা করা আমার ঠিক হয়নি। তবে আমার হরমোনজাতীয় শারীরিক সমস্যা রয়েছে। তাই নিজেকে মেয়ে ভাবতে ভালো লাগে।’
স্থানীয় ছোট ভাকলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এই বিষয়টি নিয়ে কেউ আমার কাছে আসেনি। পরিষদে অনেকে আলোচনা করছিল, তখন তাদের মুখ থেকেই আমি ঘটনাটি শুনেছি।’
গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।