চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে জোয়ারের উচ্চতা বেড়েছে। এতে নগরীর কয়েকটি নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া, মাঝারি থেকে ভারি আকারে টানা বৃষ্টিপাতে চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায় লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। বিশেষ করে অফিস-আদালতে যেতে কর্মজীবীদের এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সড়কে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। গন্তব্যে পৌঁছাতে বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
শনিবার (২৬ জুলাই) রাত থেকেই বন্দরনগরী জুড়ে টানা বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা রোববার বিকেল পর্যন্ত অব্যাহত আছে। বৃষ্টিতে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসের আশঙ্কা আছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদফতরের চট্টগ্রাম কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, শনিবার বিকেল ৩টা থেকে আজ (রোববার) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ দশমিক ৮ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা মো. ইসমাইল ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে ও মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে নিম্নচাপ উপকূল পেরিয়ে গেছে। ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনা কেটে গেলেও আগামী অন্তত ৪৮ ঘন্টা ভারি বর্ষণ হতে পারে।’
এদিকে বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে নগরীতে যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, অটোরিকশা, টেম্পু, বাসসহ আরও বিভিন্ন গণপরিবহণ একেবারে কম দেখা যায়। এতে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের সকালে কর্মস্থলমুখী যাত্রীদের বিপাকে পড়তে হয়। গণপরিবহন না পেয়ে অনেকে বাড়তি ভাড়ায় রিকশা-অটোরিকশা নিয়ে কর্মস্থলে যান। এছাড়া স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরও ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এদিকে বৃষ্টিতে কর্ণফুলী ও হালদা নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়ে গেছে। জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন খাল-নালা উপচে নগরীর মোহরা ও আগ্রাবাদসহ আরও কয়েকটি এলাকা তলিয়ে গেছে। এতে সড়ক এবং সড়কের আশপাশের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে গেছে।
চট্টগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, জোয়ারের সময় কর্ণফুলী নদীর পানি একেবারে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। রোববার বিকেল তিনটায় নগরীর কালুরঘাট এলাকার কর্ণফুলী নদীতে জোয়ারের উচ্চতা ছিল ৩ দশমিক ৬৫ মিলিমিটার। সেখানে ৪ দশমিক ১৫ মিলিমিটার জোয়ারের উচ্চতাকে বিপৎসীমা হিসেবে ধরা হয়। এ হিসেবে পানি বিপৎসীমার মাত্র আধা মিলিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পাঁচপুকুরিয়া এলাকায় বিকেল ৩টায় হালদা নদীর পানি ৪ দশমিক ৭৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। বিপৎসীমা হচ্ছে ৮ দশমিক ৪২ মিলিমিটার। এ হিসেবে পানি এখনও বিপৎসীমা থেকে ৪ মিলিমিটার নিচে আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রামের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আনিস হায়দার খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর পানি জোয়ারের সময় একেবারে বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। হালদা নদীর পানি এখনও স্বাভাবিক আছে। জোয়ারের সময় কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তবে ভাটার সময় আবার পানি নেমে যাচ্ছে।’