যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে একটি কাঠামোগত শুল্ক চুক্তিতে পৌঁছেছে দুই পক্ষ।
রোববার (২৭ জুলাই) হোয়াইট হাউজ ও ব্রাসেলসের শীর্ষ নেতাদের সরাসরি আলোচনাই এই চুক্তিতে মূল ভূমিকা রেখেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ইউরোপীয় দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের রফতানির ওপর শূন্য শুল্ক আরোপ করবে। তবে ইইউ থেকে আমদানিকৃত গাড়ির ওপর যুক্তরাষ্ট্র ১৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করবে, যা পূর্বে ২৫ শতাংশ ছিল। যদিও এটি যুক্তরাজ্যের ১০ শতাংশ শুল্কের তুলনায় বেশি। ইইউর স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।
ট্রাম্পের দাবি, ইইউ আগামী দিনে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে এবং ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের জ্বালানি পণ্য কিনবে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রও কিনবে ইউরোপ।
ইইউ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যিক সম্পর্ককে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক হিসেবে দেখা হয়। ট্রাম্প প্রশাসন এই চুক্তির আলোচনাকে বড় জয় হিসেবে তুলে ধরলেও, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের জন্য এটি পুরোপুরি পরাজয় নয়।
মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘সমগ্র ইউরোপীয় গণমাধ্যম প্রেসিডেন্টের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।’ তবে যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম আগামীকাল এমন শিরোনাম দেবে বলেও কটাক্ষ করেন যে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প কেবলমাত্র ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ আদায় করতে পেরেছেন।’
বিশ্লেষকদের মতে, ইউরোপের পক্ষে কঠিন সময় ছিল এটি। কারণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে আসছে এবং ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে বাণিজ্যিক অনিশ্চয়তা এখনও বিদ্যমান। একইসঙ্গে, ইউক্রেন যুদ্ধ, ন্যাটোর নিরাপত্তা নির্ভরতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রয়োজনীয়তাও ইইউর ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল।
সাবেক ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য আলোচক জন ক্লার্ক বলেন, ‘ইইউ দুর্বল অবস্থানে ছিল, কোনো বিকল্প ছিল না। ট্রাম্প পিছু হটতেন না। তাই তারা ১৫ শতাংশে সমঝোতা করেছে। এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য খারাপ খবর, তবে আরও খারাপ হতে পারত।’
এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সময়ে জাপান, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে সই করা বাণিজ্য চুক্তির ধারাবাহিকতা। এখন পালা মেক্সিকো, কানাডা ও চীনের।