ঢাকা: সমন্বয়কদের চাঁদাবাজি দেখে ‘বেদনায় একেবারে নীল হয়ে গেছেন’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (২৮ জুলাই) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে গণঅভ্যুত্থান মাসব্যাপী কর্মসূচিতে যুবদলের গ্র্যাফিতি আর্টস উদ্বোধনকালে সমন্বয়কদের চাঁদাবাজি নিয়ে নিজের ক্ষোভ এবং হতাশার কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আজ যখন পত্রিকা খুললাম, বেদনায় একেবারে নীল হয়ে গেছি। দেখলাম- পাঁচজন সমন্বয়ককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা জোর করে একজন সাবেক সংসদ সদস্যের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা আদায় করেছে। এই কি পরিণতি? এটিই কি আমরা চেয়েছিলাম? দেশের মানুষ কেউ কি এটা চেয়েছিল? এত তাড়াতাড়ি যদি এই ঘটনা ঘটে, এক বছরও হয়নি, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ কী?’’
তিনি বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার প্রতি মুহূর্তে সংস্কারের কথা বলছেন। ইনডাইরেক্টলি রাজনৈতিক দলগুলোকে দোষারোপ করছেন। বলার চেষ্টা করছেন যে, আমরা সহযোগিতা করছি না। তাদের এ কথাগুলো সঠিক নয়। তর্ক-বিতর্ক ও নিজেদের কোন্দলে দেশ ফের পিছিয়ে যেতে পারে।’’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘শেখ হাসিনার বিচারের বিষয়ে এখন পর্যন্ত তেমন কিছু দেখতে পেলাম না, কেন দেখলাম না? জুলাই গণঅভ্যুত্থান এক বছর হয়ে গেল, এখনও হাসিনার বিষয়ে কাজ শুরু হয়নি কেন? এগুলো রেখে আমরা এমন কিছু বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করছি, নিজেদের মধ্যে কোন্দলে জড়িয়ে পড়ছি, যার ফলে বাংলাদেশ ফের পিছিয়ে যেতে পারে। ফ্যাসিস্টদের শক্তি যোগাতে পারে। নতুন করে ফ্যাসিস্টদের সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে।’’
তিনি বলেন, ‘‘সারাদেশে আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে, খুন-গুম করা হয়েছে, নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে। গত জুলাই মাসেও আমাদের সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের গ্রেফতার করে ডিবি অফিসে নিয়ে নির্মম অত্যাচার করা হয়েছে। সিনিয়র নেতাদেরও অত্যাচার করা হয়েছে। কিন্তু একবারের জন্য আমাদের নেতারা আত্মসমর্পণ করেনি। আমাদের কোনো নেতা সেদিন মুচলেকা দেননি।’’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘টেলিভিশনে পত্র-পত্রিকায় এখন ডিবি অফিসের ছবি দেখানো হয়। আমাদের নেতা-কর্মীদের নখ তুলে নেওয়া হয়েছিল, হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, ঝুলিয়ে পেটানো হয়েছিল তাদের ছবি গণমাধ্যমে আসে না। গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্দেশে বলব, দয়া করে আপনারা সাদাকে সাদা বলবেন, কালোকে কালো বলবেন। যার যে অবদান আছে, সেই অবদানকে স্বীকার করবেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘শুধু কয়েকটি দল, কয়েকটি ছেলে নয়। পাঁচ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৯০ বছরের বয়স্ক মানুষ ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে এসেছিল। দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য দুই হাজারের বেশি মানুষ জীবন দিয়েছে। যুবদলের ৭৯ জন, ছাত্রদলের ১৪২ জন শহিদ হয়েছে।’’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে একটা পরিত্যক্ত কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ এখন কথা বলে না। দেশে গণতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়া জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছেন। তাকে নিয়ে কথা বলতে হবে।’’