ঢাকা: বাংলাদেশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল না। তবে বিগত সরকার ও তাদের দলের সমর্থকরা প্রচার করে থাকে। এটি একটি মিথ। তাদের বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কূটনীতিক জন ড্যানিলুইৎজ।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) এক সেমিনারে ড্যানিলুইৎজ বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে জুলাই বিপ্লবের তাৎপর্য: পেছন ফিরে দেখা, সামনে এগিয়ে চলা’-শীর্ষক এ সেমিনার আয়োজন করে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স (এসআইপিজি)।
ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের রাজনীতি বিভাগের সাবেক প্রধান জন ড্যানিলুইৎজ বলেন, ‘গত জুলাই-আগস্টে এখানে যে রাজনৈতিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে, তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনো না কোনোভাবে যুক্ত ছিল বলে বিগত সরকার আর তাদের সমর্থকেরা প্রচার করে থাকেন। তাদের এ প্রচারণা একটি মিথ।’
তিনি বলেন, ‘মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাইনি। আমি তাদের (বিগত সরকার আর তাদের সমর্থকেরা) যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রমাণ দিতে বলেছি। কিন্তু তারা কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। বরং, যুক্তরাষ্ট্র যে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিবর্তনে যুক্ত ছিল না, তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি।’
জন ড্যানিলুইৎজ গত আগস্টের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ১/১১-এর কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘অনেকে বিশ্বাস করেন, যেসব ঘটনাপ্রবাহের কারণে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি রাজনৈতিক পটপরিবর্তন হয়েছিল, তাতে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত ছিল। হয়তো আপনারা আমার কথা বিশ্বাস করবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের এতে কোনো ভূমিকা ছিল না। পরের দুই বছর বাংলাদেশের কাজের ধারা কেমন হবে, সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তখনকার সেনা নেতৃত্ব।’
তিনি বলেন, ‘এর মানে কিন্তু এটা নয় যে, ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির আগের ঘটনাপ্রবাহে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো উদ্বেগ ছিল না। এর মানে আবার এটাও নয় যে, যুক্তরাষ্ট্র ২০০৭-০৮ সালে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত থেকে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে কোনো কাজ করেনি।’
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আবদুল হান্নান চৌধুরী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জেনেভায় বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি এবং এসআইপিজির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো সুফিউর রহমান।