চট্টগ্রাম ব্যুরো: জুলাই অভ্যুত্থান উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি শুরু করেছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব। প্রথমদিনে অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের শহিদ পরিবার এবং ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের ‘জুলাই বিপ্লব স্মৃতি হলে’ কর্মসূচির সূচনাপর্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
উদ্বোধনী বক্তব্যে শফিকুল আলম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থান শুধু ঢাকার নয়, চট্টগ্রাম ছিল এই বিপ্লবের অন্যতম দুর্গ। চট্টগ্রাম ছিল আমাদের অহঙ্কার। এই জনপদ থেকেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি হয়েছিলো। বৃটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা, এরপর ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী জুলাই আন্দোলন- সবক্ষেত্রে চট্টগ্রাম জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছে, সঠিক পথ দেখিয়েছে।’
‘জুলাই শহিদদের প্রতি সম্মান শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি সারাজীবনের একটি গ্রাফিতি’, —এমন মন্তব্য করে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির আহ্বায়ক ফরিদা খানম বলেন, ‘জুলাই মানেই স্বজন হারানোর মাস। যারা শহিদ হয়েছেন, তারা একদিন হয়তো এই রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আসতেন—কেউ হতেন জেলা প্রশাসক, কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক কিংবা সাংবাদিক। তারাই ছিলেন জুলাই আন্দোলনের ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা।’
তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যে কোনো সাহসী উদ্যোগের পাশে থাকব সবসময়। আমরা চাই এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান হবে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে থাকবে মুক্ত চিন্তার জন্য উন্মুক্ত, আর আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে।’
শহিদ ওয়াসিম আকরামের বাবা শফিউল আলম বলেন, ‘শহিদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা এই সরকার হত্যাকারীদের বিচার করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখনো শহিদদের জুলাই সনদ ঘোষণা করে স্বীকৃতি দিতে পারেনি। আমরা (শহিদ পরিবার) আর এই সরকারের কাছে বিচারের আশা করি না।’
চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের জুলাই স্মৃতি উদযাপন উপকমিটির আহ্বায়ক সালেহ নোমান ও সদস্য সচিব মিয়া মোহাম্মদ আরিফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস এম নসরুল কদির, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, নগর জামায়াতের সাবেক আমির শাহজাহান চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, এনসিপি চট্টগ্রামের মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. মহিউদ্দিন, গণসংহতি আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক হাসান মারুফ রুমী ও স্বপন মজুমদার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জুলাই শহিদ ওয়াসিম আকরাম, ফয়সাল আহমেদ শান্ত, মোহাম্মদ ফারুক, ইশমামুল হক এবং ওমর ফারুকের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলে। শহিদ পরিবারের ৫ জন এবং ৪৩ সম্মুখযোদ্ধাকে সম্মাননা স্মারক দেওয়া হয়।