লোকটার মতিগতি সন্দেহজনক।
গ্রামবাসী তাই তার উপর থেকে চোখ সরাচ্ছে না।
আর প্রশ্ন করাও থামাচ্ছে না।
কিন্তু লোকটা নির্বিকার। প্রশ্নের উত্তর তো দিচ্ছেই না, কারও মুখের দিকে তাকাচ্ছেও না। মাটিতে চোখ নামিয়ে বসে কী যেন ভাবছে। তার বসার ভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছে, যেকোনো সময় ঘুমিয়ে পড়তে পারে। অবশ্য এতটা সুযোগ গ্রামবাসী তাকে দেবে না। চ্যাঁচামেচি করে ঠিকই তার ঘুম ভাঙিয়ে দিবে। গ্রামটা নিরিবিলি। এই গ্রামের কিছু মানুষ ভীষণ আত্মহত্যাপ্রবণ। কারণে-অকারণে মৃত্যুর পথ বেছে নিতে চায় তারা। হঠাৎ গ্রামে এমন একজন সন্দেহজনক রহস্য-মানবের আগমন ঘটে। জানা যায় তার নাম তোফাজ্জল শেখ। কিন্তু সত্যি কী সে ‘তোফাজ্জল শেখ’? নাকি ছদ্মনামের আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্য কেউ?
তোফাজ্জল শেখ কথা বলে আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষগুলোর সঙ্গে। নানারকম বুদ্ধি-পরামর্শ দেয় তাদের। তারপর একদিন উধাও হয়ে যায় সবাইকে নিয়ে। এরপর কত খোঁজ করা হয় তার! কিন্তু সন্ধান মেলে না। সন্ধান মেলে না আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষগুলোরও।
একদিন তাদের খোঁজে বাড়ি থেকে বের হয়ে পড়ে মুশফিক আর ফয়সাল। শুরু হয় এক ভয়ংকর অভিযান। পাহাড়ের গোড়ায় গিয়ে হারিয়ে যায় এই দুইবন্ধু। এরমাঝে স্থানীয় এক কিশোর রিটন জানায়, এই গ্রামে বাঘ আছে। যে বাঘ কী না যখন তখন বের হয়ে মানুষ ধরে নিয়ে যায়। তবে কী বন্ধুকে বাঘে ধরে নিয়ে গেল? স্থানীয় ছেলে রিটনকেই বা পরে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন? বন্ধু হয়ে যে তাদের সতর্কবার্তা দিয়েছিল বাঘের?
এমন টানটান গল্পে কখন যে পাতার পর পাতা এগিয়ে যাবে কিশোরদের সেই বিষয়ে বলার আর সন্দেহ রাখে না। আত্মহত্যাপ্রবণ মানুষ, তোফাজ্জল শেখ আর ফয়সাল-মুশফিকদের দেখা মিলবে কবিরদের নিখোঁজ রহস্য বইটিতে। বইটি লিখেছেন ইকবাল খন্দকার। আর কবিরদের নিখোঁজ রহস্য প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স। প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী মানব।
কী হয় অভিযান শেষে? খোঁজ মেলে কী নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর? তোফাজ্জল শেখ কী আসলেই এমন পরোপকারি-মানবসেবক মানুষ? নাকি মুখোশের আড়ালে তিনি এক ভয়ংকর মানুষ? সবই জানা যাবে কবিরদের নিখোঁজ রহস্য পড়লে। বইয়ের পাতায় পাতায় লেখক কিশোরদের জন্য রেখেছেন আকস্মিক নানা চমক। তো আর দেরি কেন? এই চমকের রাজ্যে বিচরণ করে হারিয়ে যাও চমৎকার কিছুটা সময়ে…