ঢাকা: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ‘জুলাই সনদের খসড়া’কে ‘অসম্পূর্ণ’ ও ‘বিপজ্জনক’ বলে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, নির্বাচিত সরকার গঠনের সময়সীমা নির্ধারণসহ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব জাতীয় রাজনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তাহের জানান, জামায়াত একটি সংশোধিত খসড়া সনদ তৈরি করছে, যা শিগগিরই কমিশনে জমা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘কমিশন বলছে এটি কেবল নমুনা, ভুল থাকতে পারে। যদি তাই হয়, মন্তব্য জরুরি নয়। তবে যদি এটিই মূল খসড়া হয়, তাহলে তা গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি বলেন, সংলাপে যে বিষয়গুলোতে ঐকমত্য এসেছে, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য আইনি ভিত্তি থাকা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে জামায়াত দুটি প্রস্তাব দিয়েছে: ১. অধ্যাদেশ জারি করে সাময়িক আইন প্রণয়ন, পরে নির্বাচিত সংসদে অনুমোদন। ২. গণভোটের মাধ্যমে জনগণের অনুমোদন গ্রহণ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই একটি কার্যকর ও বৈধ কাঠামো। না হলে রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’
তাহের জানান, সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কাঠামো নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। অধিকাংশ দল, এমনকি বিএনপিও মত দিয়েছে নিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন হওয়া উচিত।
খসড়া অনুযায়ী, একটি পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি গঠনের প্রস্তাব রয়েছে। সদস্যরা হলেন—প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দলের), ও দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধীদলীয় প্রতিনিধি।
এই কমিটি ১২ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর মধ্য থেকে একজনকে কেয়ারটেকার প্রধান হিসেবে মনোনীত করবে। ঐকমত্য না হলে ধাপে ধাপে ওয়ান চয়েস ও র্যাঙ্ক চয়েস ভোটিং পদ্ধতিতে সিদ্ধান্ত হবে। ভোটে অংশ নেবেন বাছাই কমিটির পাঁচ সদস্য ও সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের একজন করে বিচারপতি।
তাহের বলেন, ‘বিচারপতিদের অন্তর্ভুক্তি নিরপেক্ষতা আনবে, হর্স ট্রেডিংয়ের সম্ভাবনা কমাবে।’
তিনি আরও বলেন, বিএনপি প্রস্তাব করেছে বিষয়টি সংসদে পাঠানোর, তবে জামায়াতসহ অধিকাংশ দল মনে করে, এতে জটিলতা বাড়বে।
তাহেরের ভাষ্য, ‘এই কমিশনে ৩০টির বেশি দলের প্রতিনিধি রয়েছে, আর সংসদে মাত্র পাঁচ-ছয়টি। তাই এখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়াই যৌক্তিক।’