ঢাকা: পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের সজাগ থাকা এবং সার্ভেইল্যান্স কার্যক্রম জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর সঙ্গে পুঁজিবাজারের অংশীজনদের ৩য় মাসিক সমন্বয় সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। সভায় বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, বিএসইসি কমিশনার মোহসিন চৌধুরী, বিএসইসি কমিশনার মো. আলী আকবর, বিএসইসি কমিশনার ফারজানা লালারুখ এবং পুঁজিবাজার অংশীজন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিএসইসি’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য আমরা কাজ করছি। কিছু সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির তালিকা করে তাদের সঙ্গে বসছি আমরা। সরকার এ বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, ডায়ালগের বিকল্প নেই। সবাই মিলে যৌথভাবে সব সমস্যার সমাধান করা যায়। পুঁজিবাজারের স্বার্থে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে।
সভায় বিএসইসি চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনাসহ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কমিশনের গৃহীত উদ্যোগ-কার্যক্রম এবং পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্সের সুপারিশ ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া, পুঁজিবাজারের অংশীজনদের বিভিন্ন প্রস্তাবনার ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণসহ পুঁজিবাজারের টেকসই উন্নয়ন ও সংস্কারের অগ্রগতি তুলে ধরে বলেন, পুঁজিবাজারের টেকসই সংস্কার ও উন্নয়নের স্বার্থে সিকিউরিটিজ বিধিবিধানাবলী যুগোপযোগীকরণ ও প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ অন্যান্য পদক্ষেপ দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
তিনি বলেন, বিএসইসি ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন কোম্পানি তালিকাভুক্তির জন্য সম্ভাব্য সব রকমের চেষ্টা ও সহায়তা করছে। সম্প্রতি ডিজিটাল পুঁজিবাজার গঠনের লক্ষ্যে চালু করা নবউদ্ভাবিত অনলাইন আইপিও আবেদন ব্যবস্থা নিয়ে একটি পাইলট টেস্টিং ও প্রশিক্ষণ সেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
সভায় পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তি সম্পন্ন বৃহৎ দেশীয় কোম্পানি, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি কিংবা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্তকরণ, অনলাইন বা ডিজিটাল আইপিও আবেদন ব্যবস্থা চালুকরণ, তালিকাভুক্তির পথে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত করার জন্য আলাদা টাস্কফোর্স কিংবা টিম গঠন, আইসিবিসহ পুঁজিবাজার অংশীজন প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধি, আইসিবির যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিতকরণ, মিউচুয়াল ফান্ড খাতের উন্নয়ন, পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিতকরণ, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের ব্যবহার, সিসিবিএল এর বাস্তবায়ন ও কার্যকরকরণ, পুঁজিবাজারের বিদ্যমান বাজার কাঠামোর আধুনিকায়ন ও সেটেলমেন্টের সময় কমানো, কোম্পানিগুলোর ক্যাটাগরিকরণ, আইটি প্রতিষ্ঠানের জন্য এসএমই বোর্ডের মতো আলাদা প্ল্যাটফর্ম তৈরি, নেগেটিভ ইক্যুইটির সমাধান, স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে ট্রেজারি বন্ডের প্রাইমারি অকশন চালুকরণ, বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন, মার্চেন্ট ব্যাংকের কাজের পরিধি বাড়ানো, ফাইন্যানসিয়াল রিপোর্টিং এবং হিসাব ও নিরীক্ষা কার্যক্রমের মানোন্নয়ন, পুঁজিবাজারে করছাড়ের সুবিধা বৃদ্ধি, পুঁজিবাজারে অনিয়ম ও কারসাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া, বিনিয়োগ শিক্ষার প্রসার ও বিকাশ, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ানো, পুঁজিবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি, বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের সুরক্ষা নিশ্চিত ও স্বার্থ সংরক্ষণ, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারকে প্রতিষ্ঠিত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।