ঢাকা: বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিনটি প্রক্রিয়া সমান্তরালে না চললে দেশে আবারও জাতীয় বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার আয়োজনে মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীতে আয়োজিত ‘জুলাই স্মরণ সভায়’ দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিনটি পথেই যদি সঠিকভাবে অগ্রসর না হওয়া যায়, তাহলে ২০২৪ সালের মতো আরও একটি জাতীয় সংকট দেখা দিতে পারে। আমরা চাই, যারা খুন করেছে তারা যেন উপযুক্ত শাস্তি পায় এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়। জামায়াতের পক্ষ থেকে এ প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জামায়াত আমির বলেন, “শহীদদের রক্ত বৃথা যাবে না। আমরা শুধু বিচারই চাই না, বরং একটি দায়বদ্ধ ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক সংস্কৃতি চাই।”
তিনি আরও বলেন, ‘কে সরকার গঠন করবে, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো—যারাই আসুন, তারা যেন জনগণের রক্তের ঋণ শোধ করে, জাতির এই আমানতের মর্যাদা রক্ষা করে।’
ডা. শফিকুর রহমান দাবি করেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, ‘যারা জঘন্য অপরাধ করেছে, তাদের মধ্যে অন্তত কয়েকজনের বিচার না হলে নির্বাচনে আগ্রহী নই।’ এ বক্তব্য আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়।’
জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেখানে কিছু অপূর্ণতা ছিল। আমরা চাই তা পূরণ করে শতভাগ স্বচ্ছ ও ন্যায়ের ভিত্তিতে বিচার নিশ্চিত করা হোক। অতীতে আমাদের দলের নেতাদের সঙ্গে যেভাবে বিচারিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তা আর দেখতে চাই না।’
জামায়াতের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘সরকারে থাকি বা বিরোধী দলে আমরা জনগণের অধিকার আদায়ে নির্ভীক, ন্যায়নিষ্ঠ ও বিবেকবান ভূমিকা রাখব। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করব না।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারাও বিচারপ্রক্রিয়া ও নির্বাচনকালীন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।