Wednesday 30 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিউইয়র্কে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত দিদারুল, জন্মভূমি বড়লেখায় শোকের মাতম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৯ জুলাই ২০২৫ ২৩:৩৩ | আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ০০:৩৩

সিলেট: নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে আত্মঘাতী বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) অফিসার দিদারুল ইসলাম রতন (৩৬)। তার অকাল মৃত্যুতে জন্মস্থান মৌলভীবাজারের বড়লেখায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

একমাত্র ছেলের নিহত হওয়ার খবর শুনে হার্ট অ্যাটাক করেছেন বাবা আবদুর রউফ (নুনু মিয়া)। তার মা বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। দিদারুলের এক ভাই ও দুই বোন রয়েছে। তারা নিউইয়র্কের ব্রংকস এলাকায় বসবাস করেন। সেখানে বসবাসকারী মামাতো বোনকে বিয়ে করেন। তাঁদের আট ও ছয় বছর বয়সী দুই ছেলে আছে। তাঁর স্ত্রী বর্তমানে সন্তানসম্ভবা।

নিহত দিদারুলের গ্রামের বাড়ি সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার ছিকামহল গ্রামে। দিদারুলের ডাক নাম রতন। এলাকায় তিনি রতন নামেই পরিচিত।

বিজ্ঞাপন

পড়ালেখার সুবাদে দিদারুল কুলাউড়ার মাগুরায় এলাকায় ফুফু হাছনা বেগমের বাসায় থাকতেন। পরবর্তীতে তার পিতা কুয়েত প্রবাসী ২০০০ সালে সেখানে জায়গা কিনে বাসা নির্মাণ করেন এবং পরিবারকে নিয়ে বসবাস করেন। তখন তিনি কুলাউড়ার সী বার্ড কিন্ডারগার্টেন এন্ড স্কুলে পড়ালেখা করেন। এবং কুলাউড়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। একই বছর ২০০৯ সালে দিদারুল স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

এদিকে দিদারুলের নিহত হওয়ার খবর শুনে তার জন্মস্থান বড়লেখার ছিকামহল গ্রামে শোকের মাতম বইছে। পরিবারের লোকজন, গ্রামবাসী ও তার শৈশবের সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

দিদারুলের চাচা আব্দুর রহমান শাহীন জানান, নিহত রতন (দিদারুল) প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। দিদারুল ছোট বেলায় খুব শান্তশিষ্ট ও মেধাবী ছাত্র ছিল। আমার স্ত্রী আক্তার জাহান জেসমিনের ছাত্র ছিল দিদারুল। তখন আমার স্ত্রী দিদারুলের চাচি কুলাউড়া সী বার্ড স্কুলের শিক্ষকতা করতেন। নিউইয়র্ক যাওয়ার প্রায় ১৫ বছর পর দেশে এলে আমাদের বাসায় বেড়াতে আসে দিদারুল। সে আমার ছেলে মেয়েদের খুব স্নেহ করত। আমেরিকা থাকা অবস্থায়ও সবার খোঁজ খবর নিতো। সম্ভাবনাময় ছেলেটার এমন মৃত্যু কেউই প্রত্যাশা করেনি। তার মৃত্যুতে বড়লেখার সবাই কাঁদছে। তার জন্য নিজ গ্রাম ছিকামহলের মসজিদে মসজিদে দোয়া খতম চলছে। আল্লাহ যেন আমাদের ভাতিজাকে পরপারে ভালো রাখেন।’

প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক সময় সোমবার সন্ধ্যায় ৩৪৫, পার্ক অ্যাভিনিউতে একটি ভবনে সিকিউরিটি ডিটেইলে দায়িত্ব পালনকালে বন্দুকধারীর গুলিতে প্রাণ হারান দিদারুল। এসময় আত্মঘাতী বন্দুকধারীসহ মোট ৬ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, পুলিশ অফিসার দিদারুল, চারজন বেসামরিক নাগরিক এবং হামলাকারী নিজেই।

ম্যানহাটনের পুলিশ কমিশনার দিদারকে একজন সাহসী ও দায়িত্বশীল অফিসার হিসেবে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ম্যানহাটন পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিহত দিদারুল ইসলামের পরিবারের পাশে তাঁরা রয়েছেন।

বাংলাদেশি পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমেরিকার প্রবাসীরা তার জন্য দোয়া করছেন।

সারাবাংলা/এসএস

জন্মভূমি দিদারুল নিহত বড়লেখা শোক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর