লালমনিরহাট: মঙ্গলবার দুপুর থেকে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। পানি বাড়ায় বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন নদীতীরবর্তী বাসিন্দারা। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তার পানি স্বাভাবিক বিপৎসীমা ৫২.১৫ মিটার অতিক্রম করেছে। এতে লালমনিরহাট তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে তৈরি করেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে তাদের ফসল ও বাড়িঘর ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী।
ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে সকাল ৯টায় পানি বিপৎসীমার ১৮ সেমি নিচে প্রবাহিত হলেও দুপুর ৩টায় তা কমে ২২ সেমি নিচে চলে আসে। তবে সন্ধ্যা ৬টায় আকস্মিকভাবেই পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়া শুরু করে, যা স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে শঙ্কা বাড়ছে। হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী সানিয়াজান গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী জানান, ‘কয়েকদিন ধরে পানি ওঠানামা করছে। আজ সন্ধ্যার পর থেকে পানি হু হু করে বাড়ছে। আমাদের আমন ধানের অনেক বীজতলা তলিয়ে যাচ্ছে। আমরা খুব ভয়ে আছি বীজ তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেলে আমন আবাদে আমাদের খুব সমস্যা হবে।’
উপজেলার গুড্ডিমারী চরের একলাস হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছর বন্যায় আমাদের সবকিছু ধ্বংস করে দেয়। আমরা প্রতি বছরই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হই। এ সময় বন্যা হলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতি হবে। আমরা সরকারের কাছে কোনো রকম সাহায্যের আশা করিনি, আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তিস্তার বাঁধ নির্মাণ করা হোক। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে আমরা এ ক্ষতির সম্মুখীন আর হবো না। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার জানান ‘উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ধ্যা ৬টায় পানি বিপৎসীমা ৫২.১৫ মিটার অতিক্রম করেছে। আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। বন্যা মোকাবেলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’