Wednesday 30 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মামুনের জবানবন্দিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য
জুলাই আন্দোলন নিয়ে সব নীলনকশার কথা ফাঁস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩০ জুলাই ২০২৫ ০০:১৭

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন

ঢাকা: একে একে চমক দেখাচ্ছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এরই মধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রাজসাক্ষী হয়েছেন তিনি। এবার ফাঁস করলেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে সব নীলনকশার কথা। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে নিয়েও দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

চলতি বছরের ২৪ মার্চ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দেওয়া চৌধুরী মামুনের এক জবানবন্দিতে বহু তথ্য উঠে এসেছে। পাঁচ পৃষ্ঠার ওই জবানবন্দিতে শুধু জুলাই-আগস্ট আন্দোলন নিয়েই নয়, ভোটে কারচুপি আর গুম-খুনের কথাও তুলে ধরেছেন সাবেক এই আইজিপি।

ওই জবানবন্দি থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৯ জুলাই থেকে প্রায় প্রতি রাতেই রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার নিজ বাসায় বৈঠকে বসতেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একান্ত এ বৈঠকে অংশ নিতেন দুজন সচিব, এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম ও ডিবির হারুন অর রশীদ। থাকতেন র‌্যাব-আনসারের প্রধানরাসহ এনটিএমসির জিয়াউল আহসানও। আর এখান থেকেই আন্দোলন দমানোর সব ছক কষতেন তারা। দিতেন সব নির্দেশনা-পরামর্শও।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলন চলাকালীন সমন্বয়কদের আটকের সিদ্ধান্তও আসে নিয়মিত বৈঠক থেকেই। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন গোয়েন্দা সদস্যরা। পরবর্তীতে নাহিদ-সারজিসসহ ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে চাপ দেওয়া হয়। চালানো হয় মানসিক নির্যাতনও। এমনকি তাদের দিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতির পরিকল্পনাও হয় ওই বৈঠকে।

চৌধুরী মামুনের জবানবন্দিতে ডিবির প্রধান হারুনকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘জিন’ নাম দেওয়ার কথাও উঠে আসে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার এই সাবেক প্রধান সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখায় জিন বলেই সম্বোধন করতেন কামাল।

এ ছাড়া আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার থেকে গুলির নির্দেশনার কথা নিজের জবানবন্দিতে জানান মামুন। তিনি বলেন, ‘ধানমন্ডির সেই বাসার গোপন বৈঠকে আন্দোলনকারীদের নজরদারিসহ গুলি চালিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরির পরিকল্পনা হয়। হারুনের পরিকল্পনায় এ সিদ্ধান্ত হেলিকপ্টারে গুলি চালানোর মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেন র‌্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক।’

আন্দোলন দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্তও হয় নিয়মিত হওয়া এসব রাজনৈতিক বৈঠকে। লেথাল উইপেন বা মারণাস্ত্র ব্যবহারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা আইজিপি মামুনকে জানান কামাল। তবে এসবে আগ বাড়িয়ে সব কার্যকরের কথা জানান ডিএমপি সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব ও ডিবিপ্রধান হারুন। অতিউৎসাহী ছিলেন তারা।

গেল ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন তথা দেশ ছেড়ে পালানোর পর কীভাবে, কোথায় নিজে আশ্রয় নেন, সেই কথাও তুলে ধরেন মামুন। জানান, ওই দিন বিকেলের দিকে পুলিশ সদর দফতরে একটি হেলিকপ্টার আসে। ওই হেলিকপ্টারে তেজগাঁও বিমানবন্দরে যান তিনি। এরপর আশ্রয় নেন সেনানিবাসে। তবে আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত গণহত্যার জন্য অনুতপ্তের পাশাপাশি ক্ষমা চেয়েছেন পুলিশের সাবেক এই প্রধান কর্তা।

সারাবাংলা/আরএম/এইচআই

আবদুল্লাহ আল-মামুন জুলাই আন্দোলন জুলাই গণঅভ্যুত্থান নীলনকশা রাজসাক্ষী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর