ইসরায়েল গাজায় চলমান ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সেপ্টেম্বরেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে যুক্তরাজ্য। এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
সোমবার (২৮ জুলাই) মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্টারমার বলেন, ‘গাজায় সহিংসতা চলতে থাকলে এবং দুই রাষ্ট্রভিত্তিক শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে ইসরায়েল অগ্রসর না হলে সেপ্টেম্বরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদেই যুক্তরাজ্য এই সিদ্ধান্ত নেবে।’
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এই ঘোষণাকে হামাসের সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত করা বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আজ ইসরায়েলের সীমান্তে একটি জিহাদী রাষ্ট্র গড়ে উঠলে আগামীকাল তা যুক্তরাজ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।’
স্টারমার বলেন, প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য গাজায় মানবিক পরিস্থিতির উন্নয়ন। তিনি আরও জানান, ইসরায়েলকে অবশ্যই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে, পশ্চিম তীরে দখলদারির পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে, এবং জাতিসংঘকে অবিলম্বে ত্রাণ কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে দিতে হবে।
তবে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ঘোর বিরোধী হওয়ায়, যুক্তরাজ্যের এসব শর্ত মানার সম্ভাবনা খুবই কম।
এদিকে স্টারমার বলেন, হামাসকে অবশ্যই সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে, অস্ত্র পরিত্যাগ করতে হবে এবং গাজার শাসন ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।
যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টি। দলটির নেতা এড ডেভি একে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘সরকার যদি সত্যিই গাজায় মানবিক বিপর্যয় রোধে আগ্রহী হয়, তবে এখনই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। অস্ত্র রফতানি বন্ধ এবং ইসরায়েলি নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।’
এর আগে ফ্রান্সও ঘোষণা দিয়েছিল যে, সেপ্টেম্বরেই প্যালেস্টাইনকে স্বীকৃতি দেবে।
তবে এই সিদ্ধান্তে একমত নয় যুক্তরাজ্যের কনজারভেটিভ ও রিফর্ম ইউকে পার্টি। তারা বলছে, এই পদক্ষেপ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর সন্ত্রাসীদের পুরস্কৃত করার শামিল।
এ পর্যন্ত বিশ্বের ১৩৯টি দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২০২৪ সালে স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়েও এই স্বীকৃতি দেয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশিরভাগ পশ্চিমা দেশ এখনো মনে করে, এ স্বীকৃতি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক স্থায়ী সমাধানের অংশ হিসেবে আসা উচিত।