ঢাকা: বাংলাদেশের ওপর আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) কমানোর বিষয়ে চলমান তৃতীয় দফায় চূড়ান্ত দরকষাকষি আলোচনার প্রথম দিনে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইতিবাচক ধারণা পাওয়া গেছে। এ প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রফতানিতে শুল্ক যথেষ্ট পরিমাণ কমবে বলে আশাবাদী আলোচনায় অংশ নেওয়া বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ওয়াশিংটন ডিসিতে স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রথম দিনের এ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) ওয়াশিংটন থেকে হোয়াটস অ্যাপে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
তিন দিনের আলোচনা বৃহস্পতিবার শেষ হওয়ার কথা রয়েছে- জানিয়ে তিনি বলেন,
এজেন্ডা অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২৯ জুলাই ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং বাংলাদেশের ওপর আরোপিত শুল্ক কমানো হবে বলে আমরা দেশটির বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দফতরের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে ধারণা পেয়েছি।
আমাদের শুল্ক যথেষ্ট পরিমাণ কমবে। তবে কত হবে, তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। আজ ও আগামীকাল (বুধ-বৃহস্পতি) আমাদের বৈঠক আছে। বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু হবে বলে আশা করছি।
যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কহার ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে চলমান আলোচনায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। তার সঙ্গে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান ও অতিরিক্ত সচিব নাজনীন কাওসার চৌধুরী। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউএসটিআর-এর সহকারী ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্রেন্ডন লিঞ্চ। তার সঙ্গে রয়েছেন সংস্থার বাণিজ্য ও শুল্ক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
শুল্ক আলোচনার পুরো বিষয়টি সমন্বয় করছে ওয়াশিংটনের বাংলাদেশ দূতাবাস।
প্রসঙ্গত মার্কিন পাল্টা শুল্ক কমাতে চূড়ান্ত দফার আলোচনার আগে আগে দু’দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে দেশটি থেকে আগামী এক বছরের মধ্যে ১৫০ কোটি ডলার মূল্যের গম, ডাল ও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।
এছাড়া ইতোমধ্যে জি-টু-জি ভিত্তিতে বছরে ৭ লাখ মেট্রিক টন গম কেনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি করেছে এবং ২ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকার। এর বাইরে সরকারিভাবে এলএনজি আমদানি বাড়ানোর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এসবের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ১.৫ থেকে ২ বিলিয়ন ডলার আমদানি বাড়াতে তুলা, গম, সয়াবিন ও ডাল আমদানিকারকদের একটি প্রতিনিধিদলও যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন।