ঢাকা: দুর্যোগকালীন ও সংকটকালীন মুহূর্তে জরুরি তথ্য আদান-প্রদান, উদ্ধার তৎপরতা সমন্বয় ও প্রশাসনকে সহায়তায় অ্যামেচার রেডিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। অ্যামেচার রেডিও কার্যক্রমকে আরও সংগঠিত করতে হবে। আর অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজতর করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনে ‘বন্যা, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন অ্যামেচার বা হ্যাম রেডিও এর ভূমিকা’ শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এই সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে প্রথাগত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার বিকল্প যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে অ্যামেচার বা হ্যাম রেডিও এর কারিগরি দিক, লাইসেন্স প্রক্রিয়া ও দুর্যোগকালীন পূর্বপ্রস্তুতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। সেমিনারে সারাদেশ থেকে শতাধিক অ্যামেচার রেডিও অপারেটররা অংশ নেন।
অংশগ্রহণকারী লাইসেন্সিরা তাদের রেডিও ইকুয়েপমেন্ট, স্যাটেলাইট সরঞ্জামাদি, ওয়াকিটকি এবং ট্রান্সমিটারসমূহ প্রদর্শন করেন এবং তারা জানান যে, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার সময় মোবাইল নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হলেও হ্যাম রেডিও স্বতন্ত্র ফ্রিকোয়েন্সিতে সচল থাকায় সংকটকালে জরুরি তথ্য আদান-প্রদান, উদ্ধার তৎপরতা সমন্বয় এবং প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কমিশনের ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড অপারেশন্স বিভাগের কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ইকবাল আহমেদ বলেন, ফেনীর বন্যা পরিস্থিতে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন এলাকায় অ্যামেচার রেডিও অপারেটরগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। দুর্যোগকালীন কিংবা শান্তিপূর্ণ সময়ে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কার্যক্রম গ্রহণ, নিজেদের সুসংগঠিত ও দক্ষ করে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
কমিশনের স্পেকট্র্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আমিনুল হক দূর পাল্লায় টেলিযোগাযোগের ইতিহাস, হ্যাম তথা অ্যামেচার রেডিও এর আর্বিভাব, রেগুলেশন ও বিভিন্ন দেশে দুর্যোগকালীন এর অবদান তুলে ধরেন। তিনি অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদেরকে বাংলাদেশের দুর্যোগের ধরণ অনুযায়ী দলভিত্তিক কার্যক্রম সম্পাদন, সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজন এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাযক্রম পরিচালনার পরামর্শ প্রদান করেন। অ্যামেচার রেডিও লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজতর করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অ্যামেচার রেডিও অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি অব বাংলাদেশ এর প্রতিনিধিরা সেমিনারে তাদের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন। অ্যামেচার রেডিওকে দুর্যোগ প্রটোকলে অন্তর্ভূক্তকরণ, রিসিভার আমদানিতে কাস্টমস জটিলতা দূরীকরণ, অনলাইনের মাধ্যমে লাইসেন্স সহজীকরণ, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা থেকে দুর্যোগকালীন প্রথম রেসপন্সকারী হিসেবে আনুষ্ঠানিক র্স্বীকৃতি, ক্লাব কল সাইন প্রদান ও রিপিটার নেটওয়ার্কের আওতায় সারাদেশকে সংযুক্তকরণের বিষয়ে সহযোগিতা চান।
সভাপতির বক্তব্যে বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার মাহমুদ হোসেন বলেন, বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। অবৈধ ওয়াকিটকি পরিহার করে বিটিআরসি নীতিমালার আলোকে রেডিও ইকুয়েপমেন্ট ক্রয় এবং ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া, সেমিনারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।