ঢাকা: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “জুলাই বিপ্লব এ দেশের তরুণদের চেতনার জাগরণ, যা নতুন রাজনীতির সূচনা করেছে।”
শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমিতে আয়োজিত ‘জুলাই অভ্যুত্থান বইমেলা ২০২৫’-এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “ইতিহাসের সত্য ঘটনা আজ আর সহজে প্রকাশিত হয় না। উপমহাদেশজুড়ে এমন রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেখানে সত্য বলাটাই যেন অপরাধ। আমাদের ইতিহাসে অনেক মহিমান্বিত ঘটনা রয়েছে, যেগুলো সময়মতো আলোচনায় আসে না। এখন এমন এক সময়ে আমরা দাঁড়িয়ে, যেখানে সত্য ইতিহাস রচনা ও পাঠ করাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে।”
তিনি বলেন, “এসব ঘটনার দলিল তৈরি ও গ্রন্থ প্রকাশ জরুরি, যাতে আগামী প্রজন্ম একটি সঠিক দিকনির্দেশনা পেতে পারে। ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে আমরা নিপীড়ন, গ্রেফতার, মামলা ও রিমান্ডে নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এসব ইতিহাস মুছে ফেলার চেষ্টা হলেও, সত্যকে ঢেকে রাখা যায়নি—জুলাই বিপ্লব তারই প্রমাণ।”
রিজভী বলেন, “তরুণরা কোনো মিথ্যা বয়ানে আস্থা রাখেনি। তারা পারিবারিক সীমা ও শিক্ষাঙ্গনের গণ্ডি ছাড়িয়ে রাস্তায় বুক পেতে দিয়েছে স্বৈরাচারী সরকারের রক্তচক্ষুর সামনে। একজন গুলিবিদ্ধ হলে, আরেকজন তাকে পানি দিতে এগিয়ে গেছে—তবু গুলি থামেনি।”
সরকারি প্রচারযন্ত্র বছরের পর বছর মিথ্যা প্রচার চালিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। “সকালে উঠে রাত পর্যন্ত জনগণের মনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা চলেছে। কিন্তু তরুণরা সত্য বুঝে নিয়েছে,” বলেন রিজভী।
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখানে পলাশীর যুদ্ধ, সিপাহী বিদ্রোহ, ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলন, তিতুমীর, সাঁওতাল বিদ্রোহ, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মতো বিপ্লবী ঐতিহ্য রয়েছে। এই জাতিকে মিথ্যার বয়ানে চিরতরে দমন করা যায় না।”
অনুষ্ঠানে সাবেক ছাত্রদল নেতা সঞ্জয় দে রিপন, মনিরুজ্জামান মনির, জিকরুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।