ঢাকা: দেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ঢাকায় এক জমকালো ও আবেগঘন মিলনমেলার আয়োজন করেছেন। স্মৃতি, শ্রদ্ধা আর ভবিষ্যতের প্রত্যয়ে অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় এক অনন্য উৎসবে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের এলজিইডি ভবনের কামরুল ইসলাম সিদ্দিক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় এই ‘গেট টুগেদার ও আজীবন সদস্য নিবন্ধন অনুষ্ঠান’। এ মিলনমেলার আয়োজন করে রাজশাহী কলেজ এইচএসসি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন (RCHSCAA)।
১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী কলেজ। কলেজটি দেশের তৃতীয় প্রাচীন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বহু গুণী ব্যক্তিত্ব এই কলেজের গর্বিত প্রাক্তন—যেমন ইতিহাসবিদ যদুনাথ সরকার, দার্শনিক কাজী মোতাহার হোসেন, বিজ্ঞানী কুদরতি খোদা, লেখক রজনীকান্ত সেন এবং চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকসহ অসংখ্য কিংবদন্তি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও কলেজের ইতিহাসভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে উদ্বোধন হয়। এরপর বিভিন্ন ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের আবেগময় স্মৃতিচারণ, করোনা ও শীতকালীন সহায়তা কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরেন।
সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় ছিল গান, কবিতা, আবৃত্তি, কৌতুক, র্যাফেল ড্র ও সম্মাননা প্রদান। এসব আয়োজন অনুষ্ঠানে এনে দেয় প্রাণের ছোঁয়া। প্রাক্তনদের পরিবার-পরিজনের সরব অংশগ্রহণে আয়োজনটি হয়ে ওঠে আরও অন্তরঙ্গ ও আনন্দঘন।
১৯৭২ সাল থেকে সাম্প্রতিক ব্যাচের অ্যালামনাইদের উপস্থিতিতে মিলনমেলা হয়ে ওঠে বহুজাতিক ও বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতার সম্মেলন। উপস্থিত ছিলেন অনেক সচিব, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সেনা-পুলিশ সদস্য, শিক্ষক, আইনজীবী ও উদ্যোক্তা—যা প্রমাণ করে, রাজশাহী কলেজ আজও দেশ গঠনে বড় অবদান রেখে চলেছে।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আশিকুজ্জামান বলেন,“এই অ্যালামনাই শুধু স্মৃতিচারণের প্ল্যাটফর্ম নয়, বরং ভবিষ্যতের একটি কার্যকর সামাজিক নেটওয়ার্ক গড়ার হাতিয়ার।”
এই মিলনমেলা কেবল একটি দিন নয়, ছিল বহু বছরের সম্পর্ক ও স্মৃতির পুনর্জন্ম। রাজশাহী কলেজের মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তনরা যেভাবে একত্রিত হয়ে অতীতকে শ্রদ্ধা, বর্তমানকে উদযাপন এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করছেন—তা নিঃসন্দেহে অনুকরণীয়।