ঢাকা: সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, অন্যায়ের সমাজ ভেঙে নতুন সমাজ গড়ে তোলাই এখন আমাদের প্রধান কাজ।
শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘ওয়ারিয়র্স অব জুলাই’ আয়োজিত ‘স্যালুট টু জুলাই ওয়ারিয়র্স’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই আমি নিজেও রাস্তায় ছিলাম। আমার মাথার ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার থেকে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। পুলিশের গুলিতে একজন ছাত্র রক্তাক্ত হলো, আমি তখন তার কাছে ছুটে গিয়েছিলাম। আমারও গুলি লাগতে পারতো, কিন্তু অলৌকিকভাবে বেঁচে যাই। আমরা আর রক্ত দিতে চাই না, আমরা জ্ঞান ও মেধা দিয়ে দেশ গড়তে চাই।‘
তিনি আরও বলেন, ‘যে ভঙ্গুর রাষ্ট্রীয় কাঠামো আমরা পেয়েছি তা পাহাড়সম। গত ১৬ বছরের অপশাসনের শিকড় রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। এক বছরে এই কাঠামো ভাঙা সম্ভব নয়। তবে এই কাঠামোকে পরিবর্তন করতেই হবে। এটা আমাদের প্রজন্মের কাছে ঋণ।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা কোটার বিরুদ্ধে মেধার আন্দোলন করেছো, তাহলে আর কেন রক্ত দিতে হবে? এখন মেধা দিয়েই দেশ গড়তে হবে। ক্লাসে ফিরে যাও, মেধার যোগ্যতা অর্জন করো—এবং সাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নাও।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ওয়ারিয়র্স অব জুলাই-এর কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব মোহাম্মদ সালমান হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য দেন— মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য সচিব সাঈদুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক মো. সারজিস আলম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তানজিম জারা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এ ছাড়াও বক্তব্য দেন ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনে নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্য এবং আন্দোলনে অংশ নেওয়া যোদ্ধারা।
অনুষ্ঠানজুড়ে উঠে আসে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি, আত্মত্যাগ এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন।