‘ঢাবির পরিবেশ মৃত্যুপুরিতে পরিণত হয়েছে’
৪ জুলাই ২০১৮ ১৪:২৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে মৃত্যুপুরীর সঙ্গে তুলনা করেছেন উন্নয়ন ও অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক কাজী মারুফ হাসান। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।
বুধবার (৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত মানববন্ধনে একথা বলেন মারুফ হাসান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করেন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরাও অংশ নেন।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানানোর সময় মঙ্গলবার (৩ জুলাই) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত হন ফাহমিদুল হক।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিজের বক্তব্যে কাজী মারুফ হাসান বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা কর্মচারী মিলে প্রায় ৪০ হাজার লোকের বাস। কিন্তু গুটি কয়েকজন ছেলে একেক জনকে মারছেন, বিনা দোষে পুলিশে দিচ্ছেন অথচ আমরা কেউ কিছু বলছি না। কারণ এখানকার পরিবেশ মৃত্যুপুরীতে রুপান্তরিত হয়েছে। এই মৃত্যুপুরী থেকে উদ্ধার হতে হবে।’
কাজী মারুফ হাসান আরো বলেন, ‘এটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যারা হামলা করছেন তারা ভুলে যাবেন না যে, আপনারা ভুল করছেন। যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে তা থাকবে না। এক সময় সবাই জেগে উঠবে।’
মানববন্ধনে আরো অংশ নেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, সহযোগী অধ্যাপক সায়ন্তী হায়দার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম উদ্দিন খান, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সামিনা লুৎফাসহ সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এসময় অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন বলেন, ‘যৌক্তিক দাবি শিক্ষার্থীদের অনেক দিনের। এ দাবি সরকার মেনে নিয়ে একটা কমিটিও গঠন করেছে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে কেউ কথা বলতে পারছে না। বাকরুদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রেসক্লাবে নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের অবিভাবকরা দাড়িয়েছিল। সেখানে পুলিশ কাউকে দাঁড়াতেই দেয়নি। এটা কোন আইনে কিভাবে কবে বন্ধ হলো আমরা জানি না। দাঁড়িয়ে কথা বলা যাবে না এটা কবে বন্ধ হয়েছে তাও জানি না।’
দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মারধর করা হচ্ছে উল্লেখ করেন এই শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের নিজেদের ক্যাম্পাসে শান্তিতে থাকতে পারে তার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এর আগে যত দাবি আদায় হয়েছে সব আন্দোলনের মাধ্যমেই হয়েছে। তাই কণ্ঠ যেন কেউ রোধ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে।
সারাবাংলা/ইউজে/এসএমএন
আরও পড়ুন,
প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে আটক রেহনুমা-বাকী বিল্লাহ