Saturday 13 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুলাই গণহত্যা
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ৬ আগস্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ আগস্ট ২০২৫ ১৬:০২ | আপডেট: ৪ আগস্ট ২০২৫ ১৭:০৬

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ঢাকা: জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৬ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

সোমবার (৪ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন।

দ্বিতীয় দিনের মতো ট্রাইব্যুনালে আজ সকাল সাড়ে ১১টা থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ চলে। এদিন দুইজন সাক্ষী নিজেদের জবানবন্দি দেন। এর মধ্যে একজন আবদুল্লাহ আল ইমরান ও আরেকজন পারভীন। সাক্ষীরা নিজেদের আহত বা পঙ্গুত্বের জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন। পরে তাদের জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন।

বিজ্ঞাপন

প্রসিকিউশনের পক্ষে ট্রাইব্যুনালে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যরা।

এদিকে এ মামলার আসামি হিসেবে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের নাম থাকলেও বর্তমানে রাজসাক্ষী। তাকে আজ সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।

এর আগে, ৩ আগস্ট এ মামলায় প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ। তাকে জেরা করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। পরে আজ পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল।

ওই দিন রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলার সূচনা বক্তব্য শুরু করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তবে বিচারকার্য শুরুর আগে বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। দুপুর পৌনে ১টার দিকে খোকন চন্দ্র বর্মণ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। পরে নিজে আহত হওয়াসহ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের বর্ণনা তুলে ধরেন তিনি। এ গণহত্যার জন্য দায়ী করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, ওবায়দুল কাদের, শামীম ওসমানের সর্বোচ্চ শাস্তি চান।

এর আগে, এ মামলায় ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। একইসঙ্গে সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য যথাক্রমে ৩-৪ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়।

ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। গত ৭ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন নিয়ে স্টেট ডিফেন্সের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. আমির হোসেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম।

গত ১ জুলাই এ মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন নিয়ে শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন। ওই দিন আদালতে প্রসিকিশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তবে সময় চেয়ে আবেদন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।

গত ১৬ জুন এ মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ১ জুন শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।

এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার। এর মধ্যে তথ্যসূত্র দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার, জব্দতালিকা ও দালিলিক প্রমাণাদি চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার এবং শহীদদের তালিকার বিবরণ দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার রয়েছে। সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন ৮১ জন।

গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এই অভিযোগের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা। প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই শেষে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জমা দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

সারাবাংলা/আরএম/ইআ
বিজ্ঞাপন

আরো